ঢাকা: মার্কিন এক নাগরিকের আইফোন পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছেন আমিনুল ইসলাম নামের এক রিকশাচালক । তিনি রাজধানীর গুলশান এলাকায় রিকশা চালান।
আমিনুল বলেন, ৮ বছর যাবত গুলশান এলাকায় রিকশা চালাই। ৫ আগস্ট গুলশান-২ নম্বর এলাকায় যাত্রী নামিয়ে দেওয়ার পর আমি গদির ফাঁকে মোবাইলটি দেখতে পাই। মোবাইলটি বন্ধ অবস্থায় ছিল। চার্জ না থাকায় চালু করা যাচ্ছিল না। ফলে মোবাইলের মালিক কে, তা বুঝতে পারছিলাম না।
আমিনুল জানান, তিনি মোবাইলফোনটি চালু করার পর এক নারীর ফোন আসে। ওই নারী মোবাইলের মালিকানা দাবি করেন। তখন তিনি ওই নারীকে মোবাইল নিয়ে যেতে বলেন। পরে পুলিশের মাধ্যমে মালিকের কাছে মোবাইলটি ফিরিয়ে দেন।
আমিনুল তার পরিবারের বিষয়ে জানান, তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে। স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নিয়ে তিনি থাকেন বাড্ডা এলাকায়। জেসমিন একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তাদের দুই সন্তান আছে। তারা নানির কাছে থেকে লেখাপড়া করে।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক সীমা আহম্মেদ নামের ওই নারীর জানান, মোবাইলটি তার ছেলে স্যামি আহম্মেদের। তারা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। মাঝে-মাঝে তারা বাংলাদেশে বেড়াতে আসেন। সেদিন তিনি ছেলেকে নিয়ে রিকশায় করে রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন। পথে মোবাইলটি হারিয়ে ফেলেন। মোবাইলে চার্জ ছিল না। তাই কলও করা যাচ্ছিল না। পরে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। একপর্যায়ে সিম চালু পান। ফোন করলে এক রিকশাচালক ধরেন। তিনি মোবাইলটি পাওয়ার কথা জানান। মোবাইলটি নিয়ে যেতে বলেন। তারা পুলিশকে এ তথ্য জানান। পরে আমিনুল পুলিশের কাছে মোবাইলটি পৌঁছে দেন।
গুলশান থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল কাদির বলেন, মার্কিন নাগরিক সীমা আহম্মেদ তার ছেলেকে নিয়ে রিকশায় চড়ে একটি রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন। সে সময় মোবাইলটি পড়ে যায়। পরে তিনি গুলশান থানায় জিডি করেন। মোবাইলটিতে রোবট তৈরির একটি প্রকল্পের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত ছিল। আমিনুল মোবাইলটি পেয়ে সততার সঙ্গে ফেরত দিয়েছেন।
এসআই আরও বলেন, আমি প্রায় সাত বছরে সাড়ে চার হাজার মোবাইল উদ্ধার করেছি। কিন্তু কখনোই এমন সততার দৃষ্টান্ত দেখিনি। আমাদের সবার আমিনুলের কাছ থেকে শেখা উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
এমএমআই/ইআর