টাঙ্গাইল: পাশের দেশ ভারত পার হলেই নেপাল। বছর দুই আগে সেই নেপাল থেকে প্রবাসী নাজমুল ইসলামের প্রেমের টানে টাঙ্গাইলের সখীপুরে ছুটে আসেন সানজু কুমারী খাত্রী নামে এক তরুণী।
এরপর বিয়ে করে সুখেই সংসার করছেন তিনি। এখন শ্বশুর, শাশুড়ি, ননদ ও মেয়েকে নিয়ে ভালোই আছেন সানজু। তার স্বামী নাজমুল বর্তমানে মালয়েশিয়ায় রয়েছেন। নাজমুল সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের হুমায়ুন আলীর ছেলে।
সানজু কুমারী খাত্রী বাংলায় কথা বলার পাশাপাশি পড়তে পারেন আরবিতে কোরআন শরীফ। বাঙালি নারীদের মতোই চলাফেরা করেন।
সানজু নেপালের কাঠমান্ডু শহরের দমর বাহাদুর খাত্রীর মেয়ে। তিন বোনের মধ্যে সানজু কুমারী খাত্রী (২৩) দ্বিতীয়। সানজুর বর্তমান নাম খাদিজা আক্তার।
জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় একই কোম্পানিতে চাকরি করার সময় নেপালি তরুণী সানজু ও বাংলাদেশি যুবক নাজমুল ইসলামের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় তিন বছর প্রেম করার পর ২০১৯ সালের শেষের দিকে মালয়েশিয়া থেকে সানজু নেপালে ফিরে যান। ওই তরুণী নেপালে ফেরার এক মাস পর নাজমুলও বাংলাদেশে ফেরেন। এরপর নামজুল তার এক আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে নেপালে সানজুর বাড়িতে যান। সেখানে সানজুর পরিবারকে রাজি করিয়ে ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি সানজুকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে ফেরেন। এরপর তারা কোর্ট ম্যারেজ করেন এবং স্থানীয়ভাবেও নিকাহ রেজিস্ট্রার করেন। ওই সময় সানজু ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এরপর তার নাম রাখা হয় খাদিজা আক্তার। বিয়ের কিছুদিন পর সানজু তার দেশ নেপালে ফিরে যান। সেখানে কিছুদিন থাকার পর আবার তার স্বামীর কাছে বাংলাদেশে চলে আসেন। কিছুদিন ঘর সংসার করার পর নাজমুল তার মা-বাবার কাছে স্ত্রী সানজুকে রেখে আবার মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। এরপর থেকে শ্বশুর-শাশুড়ি ও এক ননদের সঙ্গে বসবাস করছেন সানজু। নাজমুল-সানজু দম্পতির একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বাঙালি মেয়েদের মতো করেই নেপালি ওই মেয়ে সংসার করছেন। তার শ্বশুর-শাশুড়ি তাকে সব কিছু শিখিয়ে নিয়েছেন। এখন ভালোভাবেই তিনি সংসার করছেন। কোনোদিন তাদের মধ্যে ঝগড়া লাগার খবর পাইনি। নেপালি মেয়ে হওয়ায় তার শ্বশুর-শাশুড়িও অনেক আদর করেন। নিজের মেয়ের মতোই তাকে দেখছেন।
সানজু কুমারী খাত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় একই কোম্পানিতে কাজ করার সুবাদে নাজমুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় তিন বছর পর নাজমুলের কাছে চলে আসি। শ্বশুরবাড়ির সবাই আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন। আমাদের মেয়ের নাম তাসফিয়া ইসলাম নূর। এখন মেয়ের পেছনেই সময় যাচ্ছে বেশি। সব মিলিয়ে অনেক ভালো আছি। মেয়ের বাবা দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি খুব দ্রুতই দেশে আসবেন। নেপালে মা ও দুই বোনসহ আত্মীয় স্বজন রয়েছেন। তাদের সঙ্গে ভিডিও কলে নিয়মিত কথা হয়। পরিবারের সম্মতিতেই বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেছি।
নাজমুলের বাবা হুমায়ুন আলী বলেন, ছেলের বউ এখন বাংলায় কথা বলতে পারে। বাঙালি মেয়েদের মতোই সে চলাফেরা করছে। এছাড়া পোশাকও বাঙালি মেয়েদের মতোই পড়ছে। পরিবারের কাজও সামলাচ্ছে। নেপালে তার আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সব কিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছে। এখনও তাকে দেখার জন্য অনেকেই বাড়িতে আসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
এসআই