সিলেট : বুধবার (২৪ আগস্ট) রাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বেসরকারি এনজিও সংস্থা সীমান্তিকের কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন (৪০)। ঘটনার সময় তার গলায়, পিঠে, উরু এবং নিতম্বসহ দেহের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) জানা গেল, আনোয়ার খুন হন ছিনতাইয়ের সময় বাধা দেওয়ায়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া এক ছিনতাইকারীর স্বীকারোক্তি থেকে এসব জানা গেছে।
মাহফুজুর রহমান বিপ্লব (২০) নামে এ ছিনতাইকারী বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে খুনের ঘটনা স্বীকার করেন। সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২ এর বিচারক তার জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠাতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।
পরে পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত মাহফুজুর রহমান বগুড়া জেলার শাহজাহান পুরের বিরিকুল্লা গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ সুরমার মোমিনখলা এলাকার বাসিন্দা। মাহফুজ ছাড়াও খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন- সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের লিয়াকতগঞ্জের মো. মোস্তাফা মিয়ার ছেলে জালাল আহমদ (২০) ও হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের সাটিয়া গ্রামের মৃত নূর হোসেনের ছেলে সোলেমান মিয়া (২১)।
বৃহস্পতিবার সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) সোহেল রেজার নেতৃত্বে পৃথক টিম ঘটনায় জড়িত ৪ ছিনতাইকারীর তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
আদালতের বরাত দিয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান তালুকদার এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত বুধবার রাত ৯টার দিকে রেলস্টেশন থেকে টিকিট লিংক রোড দিয়ে হুমায়ুন রশীদ চত্বরে রিকশা যোগে যাচ্ছিলেন আনোয়ার হোসেন। এমন সময় রেল লাইনে অবস্থান করা দুই ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে। তখন আনোয়ার হোসেন তাদের দুজনকে জাপটে ধরে। তিনি একজনের হাতে কামড়ও বসান। এসময় আরও দুইজন ছিনতাইকারী আসে। চারজন মিলে পরে ছুরিকাঘাত করে আনোয়ারকে হত্যা করে।
ওসি বলেন, ওই লিংক রোড অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। রাতে ওই সড়ক দিয়ে লোকজন খুব একটা চলাচল করে না। ঘটনার পর তাৎক্ষণিক আনোয়ার হোসেনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে বাঁচানো যেতো। ঘটনার অনেক পর এক সিএনজি অটোরিকশা চালক তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আনোয়ার হোসেন ভোলা জেলা সদরের শ্যামপুর গ্রামের লতিফ শিকদারের ছেলে। তিনি এনজিও সংস্থা সীমান্তিকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি সিলেটে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে কাজে এসেছিলেন। সিলেট থেকে ট্রেনে ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মো. বাবুল শিকদার বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় বিপ্লব, সোলেমান ও জালালকে গ্রেফতার দেখিয়েছে। অপরজনকে খোঁজা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময় : ১৭০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২২
এনইউ/এমজে