গাইবান্ধা : জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হত্যার শিকার হন গাইবান্ধা জেলা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা হাফিজার রহমান। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেন তার ছেলে মো. রাজু মিয়া।
হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় আসামি পক্ষ আইনজীবী শূন্য। অভিযোগ উঠেছে, বাদি পক্ষ আইনজীবী হওয়ায় বিবাদী পক্ষে কেউ মামলা লড়তে চাচ্ছেন না। ফলে আসামি পক্ষ জামিন বঞ্চিত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দী।
এদিকে আবার আসামি জনপ্রতিনিধি হওয়ায় নানা ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন পরিষদে সেবা নিতে আসা লোকজন।
এসব সমস্যা নিয়ে শনিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীরা। সেখানে তারা হত্যাকাণ্ডের বাদী-বিবাদীদের নিয়ে অভিযোগ তোলেন।
মানববন্ধনে অংশ নেন শালমারা ইউপি সদস্য সঞ্জিব হোসেন পলাশ, আলী আজম রুবেল, তফিজুর রহমান, সাইদুর রহমান, দুদু মিয়া, আব্দুল খালেক, তবিবুর রহমান, মজনু মিয়া, রঞ্জনা বেগম, জিঞ্জিরা বেগম, বিউটি বেগম, শামসুন্নাহার সাথী প্রমুখ।
তারা বলেন, চলতি বছর ২১ জানুয়ারি জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মারপিটে গাইবান্ধা জেলা বারের আইনজীবী মো. সাজু মিয়ার বাবা হাফিজার রহমান নিহত হন। তিনি ওয়ার্ড সদস্য শাহজাহান আলীর প্রতিবেশী ছিলেন।
ঘটনার সময় শাহজাহান আলী উপস্থিত না থাকলেও তাকে ও তার স্ত্রীসহ পরিবারের কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ভুক্তভোগীরা বলেন, হত্যার ঘটনায় বাদী-বিবাদী সংক্রান্ত জটিলতা হচ্ছে। মামলার বাদীপক্ষ গাইবান্ধা জেলা বারের আইনজীবী তাই আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী মামলা লড়ছেন না। এটি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।
তারা আরও বলেন, সদস্য শাহজাহান আলীর স্ত্রী দীর্ঘদিন জেল খেটে জামিন পেলেও অন্য আসামিরা এখনও হাজতে। শাহজাহান আলী দীর্ঘদিন ধরে পলাতক, ফলে পরিষদের কাজকর্ম বিঘ্নিত হচ্ছে। ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার।
অবিলম্বে এ ঘটনায় আইনি সহায়তা দিয়ে সব ধরনের বাধা দূর করা ও মামলা থেকে ইউপি সদস্য এবং তার পরিবারের সদস্যদের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে জানতে সংশ্লিষ্ট কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
উল্লেখ্য, উপজেলার শালমারা ইউনিয়নের গাড়ামারা ঘুগা গ্রামে জমিজমা নিয়ে প্রতিবেশী জবেদ আলীর ছেলে আব্দুস ছাত্তার (৪০) ও মৃত বাবলু মিয়ার ছেলে নাজমুল ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি ছাত্তার মিয়া খুটি দিয়ে তার জমির সীমানা নির্ধারণ করেছিলেন। পরে সেটি উপড়ে ফেলেন প্রতিপক্ষ নাজমুল ইসলাম।
এ ঘটনায় দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। গত ২১ জানুয়ারি সকালে হাফিজার রহমান তার ছেলে অ্যাড. সাজু ও চাচা অ্যাড. আব্দুর রশিদ বিবাদ মেটাতে যান। সে সময় তাদের ওপর হামলা করেন ছাত্তারের লোকজন। এ ঘটনায় হামলার শিকার সবাই আহত হন। একইদিন রাতে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় হাফিজারের। পরে এ ঘটনায় গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা করেন নিহতের ছেলে রাজু মিয়া।
বাংলাদেশ সময় : ১৮১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
এমজে