ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মেহগনি বাগানের গাছ কেটে জবরদখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় জবরদখলকারীদের সন্ত্রাসী হামলার আতঙ্কে দিন কাটছে ভুক্তভোগী পরিবারের।
এমন অভিযোগ উপজেলার চরবেতাগৈর ইউনিয়নের চরশ্রীরামপুর গ্রামের ভুক্তভোগী আব্দুল হামিদ তার স্ত্রী হাসিনা খাতুন ও ছেলে মামুনুর রশিদের।
তারা জানায়, ১৯৭২ সালে স্থানীয় আব্দুর রহমান ও তার স্ত্রী জমিলা খাতুন যৌথভাবে ২৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ১৯৯২ সালে আব্দুর রহমান তার নামের অংশটুকুও স্ত্রী জমিলা খাতুনকে লিখে দেন। ২০০১ সালে জমিলা খাতুন প্রতিবেশী হাসিনা খাতুন ও তাঁর ছেলে মামুনুর রশিদের কাছে সাফকাওলা দলিলে সেই জমি বিক্রি করে দেন। সেই থেকে জমিটিতে মেহগনি গাছের বাগান করে ভোগদখল করে আসছেন হাসিনা খাতুন ও তাঁর ছেলে মামুনুর রশিদ।
কিন্তু জমিলা খাতুন মারা যাওয়ার পর সম্প্রতি আব্দুর রহমান ও জমিলা দম্পতির ছেলে ইব্রাহিম ও দুলাল জানতে পারেন ১৯৮৪ সালের ভূমি জরিপে জমিটি রেকর্ড হয়েছে তাদের বাবা আব্দুর রহমানের নামে।
ভুক্তভোগী মামুন বলেন, বর্তমানে জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় আব্দুর রহমান ও জমিলা দম্পতির ছেলে ইব্রাহিম ও দুলাল আমার কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু তাদের মায়ের কাছ থেকে জমি কিনে নেওয়ায় তাদের আমি টাকা দিতে অস্বীকার করি। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবেশী জসীম উদ্দিনের কাছে অবৈধভাবে এই জমি বিক্রি করে দেয়।
এ সুযোগে চলতি বছরের ৩ জুলাই জসিম উদ্দিন সন্ত্রাসী কায়দায় আমার মেহগনি বাগানের ৪০টি গাছ জোর করে কেটে মাটি ভরাট করে। এতে বাধা দিতে গেলে জসিম ও তাঁর ছেলে আকরাম, সাদ্দাম আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিষেধাজ্ঞার মামলা দায়ের করে মামুনুর রশিদ। একই সঙ্গে ঈশ্বরগঞ্জ চৌকি আদালতে রেকর্ড সংশোধনের মামলাও করা হয়।
এরপর আদালতের নির্দেশে এই বিরোধপূর্ণ জমিতে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করে লাল নিশান টানিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ। কিন্তু জসিম উদ্দিন আদালতের আদেশ অমান্য করে নিষেধাজ্ঞার জমিতে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ করেছে।
অথচ গত ২২ জুন ওই বিরোধপূর্ণ জমির দখল ও মালিকানা সরেজমিনে তদন্ত করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তা।
এই প্রতিবেদনেও প্রায় ২১ বছর ধরে ক্রয়সূত্রে এই জমিটি হাসিনা খাতুন ও তাঁর ছেলে মামুনুর রশিদ ভোগদখল করে আসছে বলেও জানানো হয়।
এ বিষয়ে নান্দাইল থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) নূর আহম্মদ বলেন, আদালতের আদেশে ওই জমিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এখন ওই জমিতে কেউ ঘর নির্মাণ করেছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে এ সংক্রান্ত আদালতের যেকোন আদেশ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২২
আরএ