বগুড়া: বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বিয়েতে কনে শান্তনা খাতুনকে দেনমোহর হিসেবে ১০১টি বই দিলেন বর নিখিল নওশাদ।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার গোসাইবাড়ী এলাকায় কাজী অফিসে রেজিস্ট্রির মাধ্যমে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বর নিখিল নওশাদ বগুড়া ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের সাতরাস্তা গ্রামের শামসুল ইসলামের ছেলে। তিনি ‘বিরোধ’ নামে একটি ছোট কাগজের সম্পাদক। এক দশক ধরে কবিতা লেখালেখি করছেন নওশাদ। পাশাপাশি বেসরকারি একটি কোম্পানির বিক্রয় কর্মকর্তা হিসেবে তিনি কর্মরত আছেন।
কনে শান্ত্বনা খাতুন বগুড়া সোনাতলা উপজেলার কামালেরপাড়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে। তিনি বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়া দাখিল মাদ্রাসার ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষিকা।
জানা যায়, দাম্পত্য জীবন শুরুর আগে কনে শান্ত্বনার ভিন্ন শর্ত ছিল। সোনাদানা নয়, বিয়ের দেনমোহর হিসেবে উপহার চান ১০১টি প্রিয় বই। সেই প্রিয় বইয়ের তালিকাও দেন তিনি। বিয়ের পর পারিবারিক একটা গ্রন্থাগার গড়ার স্বপ্ন তার। সেখানে দেনমোহরের প্রিয় ১০১টি বই সাজিয়ে রাখবেন তিনি। কনে শান্ত্বনার প্রিয় বইয়ের তালিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হাসান আজিজুল হক, সৈয়দ মুজতবা আলী ছাড়াও দুই বাংলার জনপ্রিয় ও বিদেশি লেখকের বই উল্লেখযোগ্য।
বিয়ের বিষয়ে বরের বাবা শামসুল ইসলাম জানান, ছেলে নিখিল ১০১টি বই দেনমোহর হিসেবে পুত্রবধূকে দিয়েছে। এ বইগুলোর মোট আর্থিক মূল্য দুই লাখ দুই হাজার টাকা।
বর নিখিল জানান, কবিতার সূত্র ধরেই ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী শান্ত্বনা খাতুনের সঙ্গে তার পরিচয়। পরিচয় থেকে ভাবের আদান-প্রদান। অবশেষে সেটি রূপ নিল দাম্পত্যে। তবে দাম্পত্য জীবন শুরুর আগে শান্ত্বনার ভিন্ন শর্ত ছিল। সোনাদানা নয়, বিয়ের দেনমোহর হিসেবে তিনি উপহার চান ১০১টি প্রিয় বই। সেই প্রিয় বইয়ের তালিকাও দিয়েছিলেন শান্তনা।
গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের কাজী আব্দুল হান্নান জানান, নিয়ম অনুসারে বিয়েতে দেনমোহর হিসেবে স্বর্ণ, সম্পত্তি ও নগদ অর্থ নির্ধারণ করা হয়। সেক্ষেত্রে কনে বরের কাছে দেনমোহর বাবদ ১০১টি বই দাবি করেন। কনের প্রস্তাবে রাজি হয়েই এ দেনমোহর ধার্য করা হয়। এগুলোর বাজারমূল্য দুই লাখ দুই হাজার টাকা।
এর আগে বিয়ে উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের পড়ুয়া লাইব্রেরীতে গিয়েছিলেন নিখিল-শান্তনা। সেখানে কনের দেনমোহরের ১০১টি বই কেনা হয়। সেখানকার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ হয়। সেখানে নিখিল-সান্ত্বনা জুটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। ছবিটি প্রথমে ফেসবুকে ছেড়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পড়ুয়া লাইব্রেরির সাইফুল ইসলাম ওরফে বাদল শাহ। বিয়ের পর বর কনে সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
কেইউএ/এফআর