ঢাকা, বুধবার, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লাখো মানুষের প্রাণহানি ঘটাতে পারে ‘এএমআর’: শেখ হাসিনা

মহিউদ্দিন মাহমুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২
লাখো মানুষের প্রাণহানি ঘটাতে পারে ‘এএমআর’: শেখ হাসিনা

নিউইয়র্ক থেকে: ভবিষ্যতে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিট্যান্স (এএমআর) সংকটে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে ল্যাক্সিংটন হোটেলে ‘অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিট্যান্স’ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে এ আশঙ্কার কথা জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিট্যান্স এই সমস্যাটি সংকটে পরিণত হতে পারে। এটি সারা বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটাতে পারে। এই সংকট থেকে বাঁচতে টেকসই রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যার তথ্য অনুযায়ী, যখন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাংগাস, প্যারাসাইট সময়ের সঙ্গে বিভিন্ন কারণে নিজের ভেতরে পরিবর্তন নিয়ে আসে এবং এদের বিরুদ্ধে ওষুধে কাজ করে না তখন সেটিকে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স (এএমআর) বলে। এই এএমআর-এর কারণে ইনফেকশন চিকিৎসা কঠিন হয়ে পড়ে এবং রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, মৃত্যু হতে পারে। অন্য অনেক কারণের পাশাপাশি অ্যান্টিবায়েটিক ওষুধের অতিরিক্ত এবং ভুল ব্যবহারের ফলে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স তৈরি করছে।

এএমআর ইস্যুতে আরও বেশি কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্লোবাল লিডারশিপ গ্রুপ থেকে আমরা ইস্যুটিকে সবার নজরে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এটা স্পষ্ট যে, এই ইস্যুতে আরও বেশি কিছু করার দরকার। কৌশলগত অগ্রাধিকারগুলো ভালোভাবে চিহ্নিত হয়েছে। আমাদের সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

এএমআর মোকাবিলায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে অর্থপূর্ণ সহায়তা করার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে প্রায় ১৫০টি দেশের অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিট্যান্স (এএমআর) নিয়ে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশে এগুলো বাস্তবায়নের জন্য অর্থপূর্ণ সহায়তা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতায় এএমআর-এর গুরুত্ব পাওয়া উচিত।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক ও জাতীয় পর‌্যায়ে এএমআর-এর জন্য শক্তিশালী বিনিয়োগ প্রয়োজন।

এএমআর পরিস্থিতির ওপর নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনিটরিং হলো এএমআর-এর বোঝা বুঝতে এবং মোকাবিলা করার চাবিকাঠি। ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশ জিএলএএসএস প্ল্যাটফর্মে রিপোর্ট করছে। এ বিষয়ে সকল অংশজনদের সম্পৃক্ত থাকা আবশ্যক। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতির মাধ্যমে শুরুতে রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করা যেতে পারে।

গবেষণা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এএমআর নিয়ে উদ্বেগের প্রধান কারণ হলো, নতুন এএমআর ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা এবং উদ্ভাবনের অভাব। এজন্য বেসরকারি সেক্টরের প্রণোদনা প্রয়োজন। কিছুট জটিল জীবানুর জন্য অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিট্যান্স বাড়ার ঝুঁকি আছে। এ বিষয়ক সংগৃহীত তথ্য-প্রমাণ সবার চোখ খুলে দেবে।

এই ইস্যুতে মানুষকে সচেতন করার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, এএমআর বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টির বিকল্প নেই। নভেম্বর মাসে বার্ষিক বৈশ্বিক সচেতনতা সপ্তাহ একটি উপযুক্ত উপলক্ষ্য হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি এএমআর সূচক তৈরি করা হয়েছে। ওই সূচকগুলোর ওপর প্রতিবেদন তৈরি করে মানুষের স্বাস্থ্য, পশু স্বাস্থ্য, খাদ্য ব্যবস্থা এবং পরিবেশকে প্রভাবিত করে এমন এএমআর নীতিগুলোকে উন্নত করা যেতে পারে।

এএমআর ইস্যুতে সম্মিলিত কাজের জন্য ডব্লিউএইচও, এফএও, ওআইই এবং ইউএনইপি-কে ধন্যবাদ দেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।