ঝিনাইদহ: কাঁসার শব্দে আর বাদ্যের তালে তালে চারপাশে যেন উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় গ্রাম-বাংলার লোক ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুণ্ডু উপজেলার পোলতাডাঙ্গা গ্রামে পূর্বপাড়ার যুবসংঘ এ খেলার আয়োজন করে।
এ খেলাকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রামজুড়ে উৎসব আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। ঢাক-ঢোল আর সানাইয়ের বাজনার তালে তালে খেলোয়াড়রা লাঠি হাতে নাচ ও কসরত দেখিয়ে উপস্থিত শত শত দর্শকদের মনমুগ্ধ করেন।
খেলোয়াড়রা একে অপরের সঙ্গে লাঠি যুদ্ধে লিপ্ত হয়। লাঠি দিয়ে অন্যের আক্রমণ ঠেকাতে থাকেন। আর এরই মধ্যে নিজের চেয়ে বড় লাঠি নিয়ে অদ্ভুত সব কসরত দেখিয়ে উপস্থিত সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন লাঠিয়ালরা। আর লাঠিয়াল দলের ক্ষুদে এক লাঠিয়ালের কসরত দেখে অবির্ভূত হন প্রবীণ লাঠিয়াল। দল বেধে আগত দর্শকদের সালাম বিনিময় করেন। এসব দৃশ্য দেখে আগত দর্শকরাও করতালির মাধ্যমে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেন। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এ লাঠি খেলা দেখতে পোলতাডাঙ্গা গ্রামে হাজির হন শিশু-কিশোর-কিশোরীসহ নানা বয়সের নারী-পুরুষরা।
তোলা গ্রামের লাঠিয়াল সর্দার মন্টু হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন দিতে আমরা লাঠি খেলা দেখাই। তাদের আনন্দে আমরা মজা পাই। এ খেলা আমাদের পূর্ব-পুরুষের। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গ্রামীণ ঐহিত্যবাহী এ খেলাটি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
পোলতাডাঙ্গা গ্রামের আয়োজক কমিটির আব্দুল গাফ্ফার বলেন, মাঠের স্বল্পতা আর ভিডিও গেমসের কারণে আমাদের শিশুরা ঘরমুখো। প্রথমবারের মতো আমরা গ্রামীণ এ খেলার আয়োজন করি। আগামীতে আরও বড় করে লাঠি খেলার আয়োজন করা হবে।
পোলতাডাঙ্গা গ্রামের শিপন হোসেন বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এ লাঠি খেলা দেখতে হাজির হন সব বয়সের মানুষ। দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন দিতে কিছুটা হলেও পুরানো দিনের গ্রামীণ চিত্ত বিনোদনের সুযোগ পান বয়ো-বৃদ্ধরা।
সব শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২
এসআরএস