চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় স্বামী-স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন।
এ তদন্তকাজে জেলা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, পিবিআই, র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা অংশ নিয়েছেন। দ্রুতই এ হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট খুলবে বলে আশ্বস্ত করেছে তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নজির উদ্দীন (৭০) ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরে তার একটি সিনেমা হল ছিল। এছাড়া বর্তমানে তিনি চাল মিলের ব্যবসা করতেন। বর্তমান সময়ে ব্যবসায়িকভাবে লোকসানের মুখে পড়েন নজির উদ্দীন। তাছাড়া তার ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে অনেক সহায় সম্পত্তি আছে। সে সম্পত্তির বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ। সম্প্রতি একটি সরকারি জমির লিজ নিয়ে অপর একটি পক্ষের সঙ্গে তার বিবাদ চলছিল, সে বিষয়ে মামলাও চলমান আছে। তিনি ছিলেন এক মেয়ের জনক। এ বিষয়টিও মাথায় রাখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে শনিবার বেলা ১১টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরের পুরাতন বাজার এলাকায় নিজ বাড়িতে সস্ত্রীক খুন হন নজির উদ্দীন। নিজ বাড়ির বাথরুমে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
অপরদিকে শয়নকক্ষের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল স্ত্রী ফরিদা খাতুনের মরদেহ (৬০)। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার মৃত্যু হয় বলে পুলিশের ধারণা। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ সদস্যরা। সেখানে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আলামত সংগ্রহ ও হত্যার মোটিভ খোঁজার চেষ্টা করে তারা।
নিহতের মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন শিলা বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা রাতে মায়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। পরে রাত থেকে তাদের দুটি নম্বরের মধ্যে একটি নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। আরেকটিতে কল গেলেও তা রিসিভ হয়নি। যেহেতু তারা বাড়িতে একাই থাকতেন তাই চিন্তা বাড়তে থাকে। সকাল হলে বাবার বাড়িতে এসে দেখি বাইরে থেকে গেট তালাবদ্ধ। বাড়ির ভেতরে কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে পার্শ্ববর্তী মন্টুর সাহায্য নিয়ে দেখতে পাই মায়ের রক্তাক্ত মরদেহ ঘরে পড়ে আছে। পরে বাড়ির তালা ভেঙে ভেতরে যেয়ে বাবার মরদেহ বাথরুমে পড়ে থাকতে দেখি। ’
নিহতের জামাই অহিদুজ্জামান লিন্টুর দাবি, সম্প্রতি সরকারি একটি জমির ডিসিআর (লিজ) নিয়ে আরেক পক্ষের সঙ্গে বিবাদ চলছিল। বিবাদের কারণে মামলাও চলমান আছে। এ নিয়ে তাদের সন্দেহের অবকাশ নেই।
পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জোড়া খুনের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ। হত্যার কারণ জানতে বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে তার ব্যবসায়িক, সামাজিক ও পারিবারিক বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে তার সঙ্গে অন্য কারও দ্বন্দ্বের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হত্যার রহস্য উন্মোচনে পুলিশের একাধিক ইউনিট কাজ শুরু করেছে। দ্রুতই ঘটনার মোটিভ খুঁজে বের করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২
আরএ