ফরিদপুর: দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে শহর শাখার সীমানা প্রাচীরের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসন বলছে, ওই জায়গা নিয়ে মালিকানা সত্ত্বের আদালতে মামলা রয়েছে।
শনিবার (১ অক্টোবর) সকাল থেকে ওই মাঠের সীমানার কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ কাজটি বাস্তবায়ন করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার থেকে এ নির্মাণকাজ শুরু হয়। সীমানা প্রাচীরের সঙ্গে একটি বড় ফটক ও দুই পাশে দুটি ছোট ফটক করার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার সকাল ১০টার দিক থেকে ওই কাজ বন্ধ করে দেয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
ফরিদপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান বলেন, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শহর শাখার সামনে ফরিদ শাহ সড়ক সংলগ্ন একটি সীমানা প্রাচীর আগে ছিল। ওই জায়গাতেই নতুন আরেকটি সীমানা প্রাচীর অনুমোদন হয়ে আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। সে প্রাচীরের নির্মাণকাজ শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার থেকে।
শনিবার (১ অক্টোবর) শ্রমিকরা কাজ করতে গেলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে জানায়, ওই জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে এজন্য কাজ বন্ধ রাখতে হবে।
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান বলেন, যে জায়গায় আগে থেকে সীমানা প্রাচীর ছিল এবং যার পাশে ফরিদপুর পৌরসভার সড়ক সে জায়গা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কি বিরোধ থাকতে পারে তা আমার বোধগম্য নয়।
এ কাজটি বাস্তবায়ন করছেন ঠিকাদার মোহাম্মদ মিঠু। তিনি জানান, নয়জন শ্রমিক এ কাজটি করছিলেন। বর্তমানে গর্ত খোড়ার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ২৭টি গর্ত খোড়া হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে শ্রমিকরা কাজ শুরু করে। কিন্তু সকাল ১০টার দিকে কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এদিকে নির্মাণ সামগ্রির দামও চড়া। আমাকে ক্ষতির ঝুঁকিতে পড়তে হয়েছে।
সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসীম কুমার সাহা বলেন, কাজ শুরু করেছিল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। কাজ বন্ধ করেছে তারাই। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে মৌখিকভাবে কাজ বন্ধ করতে হচ্ছে বলে জানান।
প্রফেসর অসীম কুমার সাহা আরও বলেন, ১৯৮৩ সালে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এক আদেশের মাধ্যমে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শহর ক্যাম্পাসের খেলার মাঠটি দেন। এছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসন ফরিদপুরকে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।
প্রশাসন কেন বাধা দিচ্ছে জানতে চাইলে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ সংলগ্ন মাঠটি জেলা প্রশাসনের সম্পত্তি। আরএস ও এসএ অনুযায়ী ওটি জেলা প্রশাসনের। কিন্তু বিএস রেকর্ডে এটি শিক্ষা বিভাগের নামে রেকর্ড হয়। এ রেকর্ড সংশোধনের জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলার প্রথম জজ আদালতে ২৮/২০২১ মামলা চলমান। ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সীমানা প্রচীর করা দৃষ্টিকটু বিধায় সেটি করতে বাঁধা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২২
আরএ