সাভার, (ঢাকা): সাভারের আশুলিয়ায় প্রেমিকা কিশোরীকে ডেকে নিয়ে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগ উঠেছে তার প্রেমিক ও তিন কিশোরের বিরুদ্ধে। একই সময় এক শিশুকেও তারা ‘নির্যাতন ও ধর্ষণচেষ্টা’ করেছে বলে দাবি ভুক্তভোগীর।
রোববার (২ অক্টোবর) দুপুরে পাঁচ কিশোরকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু মণ্ডল। এর আগে গত শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে পূর্ব ডেন্ডাবর এলাকার কিশোর মো. আশরাফুল ও তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। তার বাসাতেই এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
শনিবার (২ অক্টোবর) গভীর রাতে আশুলিয়ার পূর্ব ডেন্ডাবর এলাকা থেকে আশরাফুল ও তার বন্ধু মো. ইমনকে আটক করা হয়। বাকি তিনজনের পরিচয় জানায়নি পুলিশ।
ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, পূর্ব ডেন্ডাবর এলাকায় তার বোন ভাড়া থাকেন ও একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। গত বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সে তার বোনের বাড়ি বেড়াতে আসে। সেদিন রাতে বাসার পাশে একটি দোকানে গিয়ে মোবাইল রিচার্জ করার সময় ইমন তার নম্বর নিয়ে নেয়। শনিবার রাতে ইমন তাকে ফোন করে ফুসলিয়ে বাসার সামনে ডেকে নেয়। পরে সে তার বন্ধু আশরাফুলে বাড়ি নিয়ে যায় কিশোরীকে। সে সময় তার সঙ্গে বোনের বাসার পাশের বাসার এক মেয়ে শিশু ছিল।
সে আরও জানায়, আশরাফুলের বাড়িতে ঢোকার পরপরই ইমনসহ বাকিরা ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এ সময় শিশুটিকে পাশের একটি কক্ষে বন্ধ করে রাখা হয়। সেখানে তাকে নির্যাতন ও ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়। পরে তারা কিশোরীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘরের দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে চলে যায়। এ সময় সে চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা এসে উদ্ধার করে। ইমনের সঙ্গে সে আগেও পরিচিত হয়েছিল বলেও জানায় কিশোরী।
এদিকে, নির্যাতন ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার শিশুর বাবা জানান, তার মেয়ে বাসার পাশে একটি মাদরাসায় লেখাপড়া করে। সে বাসায় তার দাদির সঙ্গে থাকে। শনিবার তিনি তেমন কিছুই শোনেননি। রোববার তাকে এলাকার লোকজন বিষয়টি জানায়। পরে তিনি তার মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, তাকে মারধর করা হয়েছে এবং পরনের কাপড় খুলে ফেলা হয়েছিল।
ভুক্তভোগী শিশুটির প্রতিবেশী গার্মেন্টস শ্রমিক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, মেয়েটি শনিবার বিকেলে অন্য কয়েকটি শিশুর সঙ্গে খেলছিল। হঠাৎ তাকে কান্না করতে দেখা যায়। জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, তাকে কয়েকজন একটি ঘরে আটকে রেখে মারধর করেছে। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। রাতেই পুলিশ এসে আশরাফুল ও ইমনসহ ৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু মণ্ডল বলেন, ভুক্তভোগী কিশোরী আমাদের জানিয়েছে তাকে একাধিকবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। শিশুটি গতরাতে আমাদের মারধরের কথা বললেও আজ অন্য কথা বলছে। ভুক্তভোগীদের থানায় আনা হয়েছে। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানোরে প্রস্তুতি চলছে। ধর্ষণের অভিযোগে রাতেই পাঁচজনকে থানায় নিয়ে এসেছি। এদের মধ্যে একজনকে নিরীহ বলছেন সবাই। তারপরও তদন্ত হবে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২২
এসএফ/এমজে