রাজশাহী: পুলিশের এসপি (পুলিশ সুপার) পরিচয়ে এক কনস্টেবলের কাছ থেকে পৌনে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া সোহাগ মাহমুদ বাপ্পী ওরফে রনিকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (২ অক্টোবর) রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে পৃথক দুটি ধারায় পাঁচ বছর করে মোট ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে ১২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বাপ্পীকে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি সোহাগ মাহমুদ বাপ্পী গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার অধিবাসী। মামলা দায়েরের পর তিনি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। কিন্তু পরে জামিনে কারাগার থেকে বের হয়ে গা ঢাকা দেন। গড় পলাতক থাকায় তার অবর্তমানেই আজ এই রায় ঘোষণা করা হলো।
তার বিরুদ্ধে সাজামূলে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গ্রেফতার হলে এই দুটি ধারার সাজা একটির পর আরেকটি কার্যকর হবে।
রায় ঘোষণার পর রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বাংলানিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর বগুড়া পুলিশ লাইনসে কর্মরত কনস্টেবল রবিউল ইসলাম বাপ্পীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন। তার বাড়ি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায়।
মামলার এজাহারে তিনি কোনো আসামির নাম উল্লেখ করেননি। পুলিশি তদন্তে সোহাগ মাহমুদ বাপ্পীকে অপরাধী হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এরপর তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর জামিনে বের হয়ে আবারও গা ঢাকা দেন। তিনি মোবাইলে আলফা-১ অর্থাৎ বগুড়ার পুলিশ সুপার পরিচয় দিয়ে কনস্টেবল রবিউলের কাছ থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।
ফোনে তাকে বলা হয়, পুলিশ সুপার স্যারের এক আত্মীয় হঠাৎ অসুস্থ। তাই দ্রুত মোবাইল ব্যাংকিং অপারেটর রকেট থেকে টাকা পাঠাতে বলেন। পরে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে স্যারের লোক এখানে আসবেন। তিনি দোকানে গিয়ে রকেট হিসাব থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পাঠান।
কিন্তু পরে আর কেউ ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে আসেননি। আর ওই ফোন নম্বরটিও বন্ধ হয়ে যায়। তাকে পুলিশ সুপার পরিচয়ে ফোন করা মোবাইল নম্বরে কল করতে বলেছিলেন এক এসআই। পরে তিনি জানতে পারেন তার সাথেও এসপি পরিচয়ে একজন কনস্টেবলকে এই দায়িত্ব দিতে বলা হয়েছিল। তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে রবিউলকে জানান। ততক্ষণে টাকা চলে গিয়েছিল। পরে রবিউল মামলা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২২
এসএস/এমজে