ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ই-টিকিটিংয়ের পর হঠাৎ কেন কমে গেলো বাস?

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২২
ই-টিকিটিংয়ের পর হঠাৎ কেন কমে গেলো বাস?

ঢাকা: বছরের পর বছর ধরে বাসে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে দিতে অতিষ্ঠ যাত্রীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছিলো ই-টিকিটিং সিস্টেম।

কিন্তু হঠাৎ রোববার (২ অক্টোবর) মিরপুর থেকে রামপুরা রুটে যাতায়াত করা নূর-ই মক্কা, রাজধানী ও আছিম পরিবহনের বাস সংখ্যা কমানো হয়।

ফলে যাত্রীদের পোহাতে হয় সীমাহীন ভোগান্তি।

এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে আছিম পরিবহন, রাজধানী পরিবহন ও নূর-ই মক্কায় ই-টিকিটিং পদ্ধতিতে ভাড়া আদায় শুরু করা হয়।  

যদিও পরীক্ষামূলক যাত্রার পরের দিন থেকেই অভিযোগ ছিল বিভিন্ন রুটে বাস কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।  

মিরপুর থেকে বসুন্ধরা এলাকায় আসা তরুণ এক সাংবাদিক বলেন, আজকে বাস না পেয়ে পায়ে হেঁটে, রিকশা করে কালসী থেকে বসুন্ধরা পর্যন্ত আসতে হয়েছে।  

ওয়াসিক জাহান এসহান নামে এক যাত্রী বলেন, আজকে যদিও জ্যামের কারণে কম, তবুও আগের চেয়ে তুলনামূলক বাস কম ছিল।

হঠাৎ কেন বাস কমে গেল?
এক বাস মালিক অভিযোগ করে বলেন, স্ট্যান্ড থেকে টিকিট ছাড়া যাত্রী না তুললেও পরে যাত্রী তোলা হচ্ছে। আর সেই টাকা আসলে কোম্পানি পাচ্ছে না। আবার কোম্পানি যে টাকা পাচ্ছে তার পুরোটার ভাগ বাটোয়ারাও হচ্ছে না সঠিকভাবে। দিনশেষে কিছুই থাকছে বাসমালিকদের।

বাসমালিকরা অভিযোগ করছেন, তারা টাকার কোনো হিসাব পাচ্ছেন না। দিনশেষে সব খরচ বাদ দিয়ে ৫০০ টাকাও থাকছে না। তাদের অভিযোগের পুরোটার বাসশ্রমিক ও মালিক সমিতির দিকে।

এসব কারণেই হঠাৎ করেই এই রুটে বাসের পরিমাণ কমে গিয়েছে। অন্যদিন যা চলে রোববার তার সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাস চলেছে এই রুটে।

কত বাস চলছে এবং কত লাভ হচ্ছে তার সঠিক তথ্য দিতে রাজি হয়নি বাসমালিক সমিতি।  

সংকটের কথা স্বীকার করে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান বলেন, আজকে ঝড় ছিল এজন্য অনেক মালিক বাস নামায়নি। বাসশ্রমিকেরা স্টপেজ ছাড়া যাত্রী তুলছে এবং টিকিট না দিয়েই টাকা নিচ্ছে। ফলে পরিবহন মালিকদের আয় কম হচ্ছে।

তবে এসব সমস্যা সমাধানের কাজ চলমান দাবি করে তিনি বলেন, আমরা আজকে এ বিষয়ে কয়েকটি মিটিং করেছি যেন সমাধানে আসা যায়।  

যেহেতু বিষয়টি নতুন, সেহেতু ধীরে ধীরে সমাধানও আসবে বলে দাবি করেন বাস মালিকদের এ নেতা।  

ই-টিকিটিংয়ে সুবিধা পাচ্ছেন যাত্রীরা
যে দূরত্বে আগে ২০ বা ২৫ কিংবা ৩০ টাকা ভাড়া আদায় হতো, সেখানে ভাড়া আসছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ফলে যাত্রীরা কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করছেন। একইসঙ্গে বাসে ভাড়া নিয়ে বিতণ্ডাও কমেছে। কারণ সরকার নির্ধারিত হারেই ই-টিকিটিং ব্যবস্থায় ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।  

বাংলানিউজের সিনিয়র নিউজরুম এডিটর এম জে ফেরদৌস বলেন, আগে কালসী থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক পর্যন্ত ভাড়া রাখতো ৩০ টাকা। ই-টিকিটিং ব্যবস্থা আসার পরে ভাড়া নিচ্ছে ১৫ টাকা।  

কী ভোগান্তি যাত্রীদের?
ই-টিকিটিংয়ে সুবিধা পেলেও যাত্রীদের অনেক ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে।

বিশেষ করে রাতের বেলা টিকিট কাটার পর গন্তব্যে পৌঁছার আগেই যাত্রীদের বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। যাত্রীরা ভাড়া ফেরত চাইলে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, টিকিট কাটা হয়ে গেছে, আর ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়।

আবার নির্দিষ্ট স্টপেজে যাত্রী না তুলে যেখান-সেখান থেকে যাত্রী তোলা হচ্ছে। ফলে যাতায়াতে সময় বেশি লাগছে, সড়কে যানজট হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২২
এনবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।