ঢাকা: বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্মলগ্ন থেকেই জনবল সংকট রয়েছে। সেই কারণে শূন্য পদের বিপরীতে এতোদিন অস্থায়ী শ্রমিক (TLR) নিয়োগ দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।
কিন্তু এর পরিবর্তে বর্তমানে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে লোক নিয়োগের বিরোধিতা করছেন রেলওয়ে শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রেলওয়ে কর্মচারীদের মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন পদে এসব শ্রমিকরা অস্থায়ীভাবে কর্মরত আছেন।
এসব পদ হচ্ছে- মেকানিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং (গেট কিপার, ওয়েম্যান, লোকো খালাসী, ক্যারেজ খালাসী) সিগন্যালিং ইলেকট্রিক্যাল ও ট্রান্সপোর্টেশন (গেট কিপার, পোর্টার, পয়েন্টসম্যান) ইত্যাদি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিক পরিষদের নেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, এখানে দারোয়ান, রেলের ইঞ্জিনসহ বিভিন্ন পদে অস্থায়ীভাবে মোট ৭ হাজার শ্রমিক কর্মরত আছেন। আমাদের ৪ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। অবিলম্বে তা পরিশোধ না করলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।
বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের শ্রমিক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, রেলওয়েত ব্রিটিশ আমল থেকেই অস্থায়ী শ্রমিকরা ছিলেন। পরবর্তিতে তাদেরকে শ্রম আইনের ভিত্তিতে স্থায়ীকরণ করা হতো। কিন্তু বর্তমানে তা কার্যকর হচ্ছে না। শ্রম আইনে বলা আছে, অস্থায়ীভাবে তিন বছর কাজ করার পরে রাজস্ব খাতে চাকরি স্থায়ী হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১৭ সালে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু বিষয়টি এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়নি।
তিনি দাবি করেন, গত ৩০ জুন’ ২০২২ রেলের সব স্থায়ী শ্রমিককে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য একটি চিঠি জারি করে। এসময় রেলের চট্টগ্রাম ও লালমনিরহাট বিভাগের ক্যারেজ শ্রমিকদের কাজ থেকে বাইরে রাখা হয়। ধীরে ধীরে সব অস্থায়ী শ্রমিককে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।
তিনি বলেন, ‘গত জুন মাস থেকে আমাদের কাজের কোনো বাজেট নেই। আমরা রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, সচিব হুমায়ুন কবির, মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারের কাছে চিঠি দিয়েছি। রেলের মহাপরিচালক আমাদের বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরের পর তোমাদের চাকরি নেই’।
বক্তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা নিরসনকল্পে সংশোধিত অ্যাডহক ভিত্তিক নিযুক্ত কর্মচারী নিয়মিতকরণ বিধিমালা অনুসারে আউটসোর্সিং খাত বাতিল করতে হবে।
তারা বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে নন-গেজেটেড কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮৫ বিধি-৩ অনুযায়ী ৩ ধরনের নিয়োগ পদ্ধতি উল্লেখ আছে। পদ্ধতিগুলো হচ্ছে- বাই ডাইরেক্ট রিক্রুটমেন্ট অর্থাৎ সরাসরি নিয়োগ, বাই প্রমোশন ট্রান্সফার অর্থাৎ পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ এবং আত্মীকরণের মাধ্যমে নিয়োগ।
রেলওয়েতে কখনো আউটসোর্সিং খাত ছিল না উল্লেখ করে তারা বলেন, বর্তমানে আমাদের অস্থায়ী শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করার জন্য এটা চালু করা হয়েছে। যা আমাদের জীবন ও ভবিষ্যৎ ধ্বংস করার চক্রান্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, ৩ অক্টোবর, ২০২২
এনবি/এমএমজেড