যশোর: যশোরে রনি শেখ (২৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে রনির লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।
রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের নারায়ণপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার একটি খাল থেকে রনির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত রনি শেখ চাঁচড়ার ইমরোজ হত্যা মামলার এজাহার ও চার্জশিটভুক্ত আসামি এবং চাঁচড়া হঠাৎপাড়ার বাবুর আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, মাদকসহ নয়টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন রকি নামে এক যুবককে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (০৩ অক্টোবর) বিকেলে রনির লাশ নিয়ে যশোর শহরের দড়াটানা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলে নিহতের স্বজনেরা ছাড়াও প্রায় শতাধিক মানুষ অংশ নেন। মিছিল থেকে রনির হত্যাকারীদের দ্রুত আটক ও বিচার দাবি করা হয়।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে স্বামী রনির মরদেহ নিতে এসে আহাজারি করে স্ত্রী সোনিয়া খাতুন বলেন, গত শনিবার বিকেল ৫টার দিকে একই এলাকার রবিউল ইসলাম ও রকি নামে দুজন রনিকে পূজা দেখার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাতে বাড়ি না ফেরায় বিভিন্নস্থানে খোঁজখবর নিয়ে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। রোববার রনির বাবা বাবর আলী শেখ কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর রকিকে আটক করে পুলিশ। রকির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁচড়ার নারায়ণপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের শ্মশানের পাশের খাল থেকে রনির লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত রনির স্ত্রী আরও বলেন, আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। আমার দুধের শিশুরে যারা বাপ হারা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শনিবার রনিকে মদ খাওয়ার জন্য ডেকে নিয়ে যায় কুলিন বর্মণের ছেলে রকি (১৯)। ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রকিসহ কয়েকজন মিলে হত্যা করেছে রনিকে। তার গলা কাটা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
যশোরের চাঁচড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আকিকুল ইসলাম বলেন, নিহত রনি চাঁচড়া নারায়ণপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা বাবর আলীর ছেলে। মাছের ঘেরে কাজ করতেন রনি। শনিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। রোববার সন্ধ্যায় চাঁচড়া দক্ষিণ বর্মণপাড়ার শ্মশানের পাশে তার লাশ পাওয়া যায়। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। সোমবার ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে রকি নামে এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, নিহত রনি একই এলাকার নুরু মহুরীর ছেলে ইমরোজ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ইমরোজ হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার সাথে জড়িতদের আটকের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২২
ইউজি/এমজেএফ