মানিকগঞ্জ: গত দুই দিন ধরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। তবুও নিম্নবিত্তরা পেটের দায়ে কাজের সন্ধানে যাচ্ছেন ঘরের বাইরে।
সোমবার (০৩ অক্টোবর) সকালের দিকে জেলা শহরের শহীদ রফিক সড়কে বৃষ্টিতে ভিজেই যাত্রী নিয়ে যেতে রিক্সা চালকদের।
এমন চিত্র প্রায় সবখানেই দেখা যায়। তারা ভিজতে ভিজতেই কাজ করেন। এটি না করলে তাদের অনেকের বাড়িতে চুলা জ্বলে না। আর চুলা না জ্বললে পরিবারের সবাইকেই না খেয়ে দিন পার করতে হবে। তাই পরিবারের কথা ভেবেই তারা বৃষ্টিতে ভিজে রিকশা চালান।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আর এই বৃষ্টিতে ভিজে রিকশাচালকরা যাত্রী এক স্থান থেকে আরেক স্থানে আনা-নেওয়ার কাজ করছেন। বৃষ্টির মধ্যে যানবাহন কম হওয়ায় যাত্রীরা কিছু টাকা বাড়তি দেবেন এমন প্রত্যাশাতেও রাস্তায় নামেন তারা। কিন্তু অনেকক্ষন ভিজতে থাকার করণে অনেক চালকরা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
বেউথা এলাকার রিকশাচালক মোবারক মিয়া বলেন, সকাল থেকেই বৃষ্টির মধ্যেই কাজে বের হয়েছি। কাজ না করলে খামু কি! সারাদিন কাজ করার পর যে টাকা আয় করমু সেই টাকা দিয়া ঘড়ে চাল কিনা নিয়া যামু। চাল কিনার পর ঘরে রান্না হবে তারপরে বাড়ির সবাই একসঙ্গে খাবার খামু।
গাইবান্ধা থেকে আসা আরও এক রিকশাচালক হোসেন মিয়া বলেন, আমি প্রায় ৫ বছর ধরে বৌ-বাচ্চা নিয়া মানিকগঞ্জে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করি। ভাড়ার রিকশা চালাই। আর যে টাকা আয় করি সেই টাকা দিয়া চাল ডাল নিয়া বাড়িতে যাই। রিক্সা না চালাইলে না খাইয়া থাকতে হইবো। গরিবের কোনো রোদ আর বৃষ্টি নাই, সব দিনই এক। কাজ না করলে ভাত জোগাড় করতে পারমু না। তাই বৃষ্টিতে ভিজেই রিকশা টানি।
জেলা শহরের এক দোকানের মালিক লাবু বেপারি বলেন, বৃষ্টি হলেও দোকান খুললে কম-বেশি বেচা কেনা হবেই। তাই দোকানে যাচ্ছি। বৃষ্টির মধ্যে তেমন একটা রিকশা বা ইজিবাইক পাওয়া যায় না। যেই দুই একটা পাওয়া যায়, তাতে ভাড়া একটু বেশি দিতে হয়। এক হিসেবে সেটিও অনেক ভালো।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) কাজী এ কে এম রাসেল বলেন, বৃষ্টির মধ্যে না ভেজাটাই অনেক ভালো। কারণ বেশি সময় ভিজলে জ্বর ঠাণ্ডাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২২
এফআর