কক্সবাজার: কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের প্রথম দিনেই জাহাজে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন দুই শতাধিক পর্যটক।
পর্যটকদের অভিযোগ, জাহাজটিতে দুর্গন্ধ এবং এসি কাজ না করায় তাদের গণহারে বমি শুরু হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকাল সোয়া সাতটার দিকে কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিওটি ঘাট থেকে ৭৫০ জন যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে যাত্রা করে ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস’ নামের একটি জাহাজ। তবে আসার সময় ফিরেছেন মাত্র ২০-৩০ জন।
জাহাজে থাকা বেসরকারি টেলিভিশনের এক প্রতিনিধি জানান, জাহাজটি যাত্রা শুরুর পর থেকে পর্যটকরা চরম অস্বস্থিতে ভোগেন। এছাড়াও জাহাজটি যাত্রা শুরুর পর থেকে সাগর উত্তাল থাকায় জাহাজে একটু অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ছিল।
অন্যদিকে জাহাজটির এসি ভালোভাবে কাজ করছিল না। জাহাজে দুর্গন্ধ। সবমিলিয়ে অসংখ্য পর্যটক বমি করতে শুরু করে। বমি আর বমিতে একাকার হয়ে ওঠে জাহাজ। এ সময় অনেক পর্যটক অসুস্থ হয়ে জাহাজে শুয়ে পড়ে, শিশুরা কান্নাকাটি শুরু করে। জাহাজটিতে এক
ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হয়। এসব কারণে জাহাজটি ১২টায় সেন্টমার্টিন দ্বীপে পৌঁছার কথা থাকলেও পৌঁছেছে দুপুর ১টায়।
জাহাজে থাকা সময় টেলিভিশনের সাংবাদিক সুজা উদ্দিন রুবেল বাংলানিউজকে বলেন, বমি করতে করতে শেষ। আর কোনোদিন সেন্টমার্টিন যাব না।
জাহাজটি বিকেল সাড়ে ৩টায় দ্বীপ থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে জানিয়ে রুবেল বলেন, যাওয়ার সময় সাড়ে ৭ শত পর্যটক থাকলেও ফিরেছে কেবল ২০ থেকে ৩০ জন। অতিরিক্ত ভোগান্তির কারণে অনেক পর্যটক ফিরে আসার কথা থাকলেও ফেরেনি।
‘চ্যানেল ২৪’-এর ক্যামেরাপার্সন মো. রাসেল বলেন, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি আর কোনোদিন হইনি। বমির সময় মনে হয়েছিল মরেই যাব।
ভোলার পর্যটক রফিকুল ইসলাম জানান, দিনে দিনে সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার আশা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। দ্বীপে অবস্থান করছেন তিনি। অসুস্থ শরীরে ফেরার সাহস হয়নি। জাহাজ ভ্রমণ এমন চরম তা জানা ছিল না।
এমভি কর্ণফুলি জাহাজের কক্সবাজার অফিসের ইনচার্জ হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জানান, তিনি কক্সবাজারে রয়েছেন। জাহাজে বমি করাকে অসুস্থতা বলতে রাজি নন তিনি।
‘জাহাজে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা না থাকলে বমি হওয়াটা স্বাভাবিক। ’ মন্তব্য করেন এ কর্মকর্তা।
আর জাহাজে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্গন্ধ ছড়ানোর বিষয়টি সত্য নয়। তবে দীর্ঘদিন পর জাহাজটি চালু করাতে এসিসহ যান্ত্রিক কিছু ত্রুটি ছিল।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) চৌধুরী মিজানুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, পর্যটক অসুস্থ হওয়ার খবর শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২২
এসবি/এসএ