ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রায়পুরায় মেঘনায় ডাকাতি, নৌপথে নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২২
রায়পুরায় মেঘনায় ডাকাতি, নৌপথে নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

নরসিংদী: মেঘনা নদীতে ডাকাতদের কবলে পড়ে নগদ টাকাসহ কোটি টাকার লোকসানে পড়েছেন নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষ্যা ইউনিয়নের গরু ব্যবসায়ীরা।  

ডাকাতরা ছুরি, চাপাতি, পিস্তলসহ দেশীয় তৈরি একাধিক অস্ত্র নিয়ে হামলা করে নৌকার সব ব্যবসায়ী ও যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র লুটে নিয়ে যায়।

 

এজন্য সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি ও নৌ-পথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ অর্থিক সহযোগিতার দাবি জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার বিকেলে রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষ্যা ইউনিয়নের দড়িকান্দি এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব দাবি জানান তারা।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে রায়পুরা উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের সদাগরকান্দি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার দুর্গারামপুর নৌ সীমানার মধ্যবর্তী এলাকার মেঘনা নদীতে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।  
 
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, নবীনগরের বাইশমৌজা এলাকায় প্রতি মঙ্গলবার গরুর হাট বসে। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত ব্যাপারী ওই হাটে যান। কেউ কেউ গরু বেচতে নিয়ে যান, কারও কারও কাছে থাকে গরু কেনার নগদ টাকা। মঙ্গলবার সকালে রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর ও নিলক্ষ্যার দুটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও বাঞ্ছারামপুরের তিনটি গরুবাহী ট্রলার বাইশমৌজা হাটে যাচ্ছিল। পাঁচটি নৌকায় ২০০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন। তাঁদের প্রায় সবাই গরু ব্যবসায়ী। এ সময় ট্রলারগুলো সদাগরকান্দি লঞ্চঘাটের কাছাকাছি যাওয়ার পর দুটি স্পিডবোট নিয়ে আট-নয়জন মুখোশধারী ডাকাত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ইঞ্জিনচালিত নৌকায় অতর্কিত হামলা চালায়। পরে স্পিডবোট থেকে ট্রলারে উঠে অস্ত্র ঠেকিয়ে নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা। এ সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে এক মাঝিসহ পাঁচ ব্যবসায়ীকে আহত করে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী খলিল মিয়া বলেন, ডাকাতদল অতর্কিত হামলা চালিয়ে মোবাইল ফোনসহ নগদ অর্থ লুটপাট করে কোটি টাকা ছিনিয়ে নেয়। লোকসানে পড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমরা প্রত্যেকেই দার দেনা করে এনজিও থেকে টাকা উঠিয়ে গরু ক্রয় বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করতাম। ঘরে খাবার নেই। সামনে কি করে চলবো।  

জালাল উদ্দীন বলেন, ডাকাতরা ছুরি, চাপাতি, পিস্তলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্পিডবোটে করে এসে নৌকার মাঝিকে আঘাত করে নৌকায় ওঠে। পরে স ব্যবসায়ী ও যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ডাকাতি করে নিয়ে যায়।  

নৌকার মাঝি আবেদ আলী বলেন, প্রতি সপ্তাহেই নৌকাতে ৮০ থেকে ৯০ জন যাত্রী নিয়ে হাটে যাই। ঘটনার দিন হঠাৎ পেছন থেকে একটি স্পিডবোটের মাধ্যমে কয়েকজন মুখোশপড়া লোক এসে আমাকে নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ করতে বলে। তাদের কথা না শোনায় তারা আমার পিঠে আঘাত করে। পরে তারা নৌকায় ওঠে নিজেরাই নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ করে ফেলে। এরপর তারা বিভিন্ন অস্ত্র দেখিয়ে যাত্রীদের সব কিছু ছিনিয়েই নিয়ে যায়।  

সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেন এবং নৌ-পথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জজ মিয়া, ধন মিয়া, রিপন মিয়া, জাকির, ইদ্রিস মিয়া, খালেক মিয়া, জলিল মিয়া, শিপনসহ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।