ঢাকা: রাজধানীতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জশনে জুলুস শোভাযাত্রা ও মহাসমাবেশ হয়েছে। মাইজভান্ডার দরবার শরীফের বর্তমান ইমাম শাহ্সূফী সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানীর (মা.জি.আ.) নেতৃত্বে প্রতি বছরের মতো এ জশনে জুলুস শোভাযাত্রা ও মহাসমাবেশ হয়।
রোববার (৯ অক্টোবর) সকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে জশনে জুলুস শুরু হয়ে রাজধানীর শাহবাগ, মৎস ভবন, দোয়েল চত্বর হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে আন্তর্জাতিক শান্তি মহাসমাবেশে মিলিত হয়।
শোভাযাত্রার অগ্রভাগে দৃষ্টিনন্দন বড় বড় হরফে লেখা ছিল ‘ইয়া নবী ছালামু আলাইকা’, ‘ইয়া রাসূল ছালামু আলাইকা’। আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়ার ব্যবস্থাপনায় জশনে জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা কলেমা খচিত পতাকা, প্লেকার্ড, ফেস্টুন ছাড়াও বহন করে বাংলাদেশের বিশাল জাতীয় পতাকা। জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা নারায়ে তকবির, নারায়ে রেসালতের স্লোগানে স্লোগানে রাজধানীর রাজপথ মুখরিত করে তোলে।
শোভাযাত্রা শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আন্তর্জাতিক শান্তি মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডরী বলেন, মহানবীর (সা.) দুনিয়ায় শুভাগমন জগৎবাসীর জন্য আল্লাহ পাকের বিশেষ রহমত ও অনুগ্রহ। প্রিয়নবীর (সা.) শুভাগমন না হলে সৃষ্টি জগৎ অস্তিত্বই লাভ করতো না। রাসূল (সা.) দুনিয়ায় শুভাগমনের মূল উদ্দেশ্যই হলো একটি শান্তি ও সহাবস্থানপূর্ণ মানবিক বিশ্ব সমাজ গড়ে তোলা। আজ সিরিয়া, ফিলিস্তিন, মিয়ানমারসহ তাবৎ দুনিয়ায় যুদ্ধ সংঘাত ও রক্তপাতে জর্জরিত। শক্তিধর দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না করে অস্ত্রের ভাষায় কথা বলছে। নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে সমগ্র পৃথিবীর মানুষ খাদ্য জ্বালানি সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। এই দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে মহানবীর (সা.) আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই। মদিনার সনদের আলোকে কীভাবে সমতাভিত্তিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক আধুনিক কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠন করা যায় সাড়ে চৌদ্দশত বছর আগে রাসূলই (সা.) আমাদের দেখিয়েছেন।
শাহ্সূফী সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী আরও বলেন, প্রিয়নবী (সা.) ছিলেন পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র নায়ক।
পীরজাদা মুফতী মাওলানা বাকী বিল্লাহ আল আযহারী ও মুফতী মাওলানা এইচএম মাকসুদুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ১৪ দলীয় সমন্বয়ক ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু এমপি। উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক এমপি। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এমপি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি, অ্যাডভোকেট নূরুল আমিন রুহুল এমপি, মইনীয়া যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহজাদা সাইয়্যিদ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, কার্যকরী সভাপতি শাহজাদা সাইয়্যিদ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, অ্যামারিকা থেকে আগত আন্তর্জাতিক ইসলামিক স্কলার ড. শেখ আহমদ তিজানি বিন ওমর, মরক্কো থেকে মো. লাকদার দারফুফি, তুরস্ক থেকে সাইয়্যিদি মোহাম্মদ ইএল হোসাইনী, অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০২২
এসএমএকে/এসএ