সাভার (ঢাকা): বর্তমান সময়ে সারাদেশে বিদ্যুতের বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে সাভারের আশুলিয়ায় একটি স্কুলে বিজ্ঞান মেলায় খুদে শিক্ষার্থীরা তৈরি করেছে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয় ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বিকল্প ব্যবস্থার উদ্ভাবনী প্রকল্প।
রোরবার (৯ অক্টোবর) সকালে হলি ক্রিসেন্ট স্কুলে দুই দিনব্যাপী বিজ্ঞান মেলা ও গণিত অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতার সমাপনীর আয়োজন করা হয়।
বিজ্ঞান মেলায় ২৭টি গ্রুপ ও গণিত অলিম্পিয়াডে স্কুলটির ৩৭টির গ্রুপ অংশগ্রহণ করেছে। প্রতিটি গ্রুপে পাঁচজন করে শিক্ষার্থী ছিল। এ দুই প্রতিযোগিতাকে প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শাখায় ভাগ করা হয়েছে। বিজয়ীদের মধ্যে প্রথম তিনজনকে পুরস্কার দেওয়াসহ অংশগ্রহণ করা সবাইকে পুরস্কার দেওয়া হবে।
স্কুলটির মাঠে শিক্ষার্থীরা টেবিলের উপর তাদের উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শন করছেন। এর মধ্যে বায়ুর সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সিরিজ সার্কিট, বিদ্যুৎ সাশ্রয় প্রকল্প, নবায়নযোগ্য শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সোলার মডেল, হাইড্রলিক ব্রিজ, লাভা ল্যাম্প, পরিকল্পিত শহর, চিকিৎসা বিজ্ঞান, অটোমেটিক বেরিকেট রোডসহ বিজ্ঞান বিষয়ক নানা উদ্ভাবনী প্রকল্প।
বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ চারটি পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছে দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জুবায়ের ইসলাম, সাফায়েত আরাফাত মুক্ত, সাব্বির আহমেদ, হাছিবুল ইসলাম ও শাহাদাত হোসেন শাকিল।
এ উদ্ভাবনী দলের প্রধান মো. জুবায়ের ইসলাম বাংলানিউজকে বলে, আমরা চারটি প্রকল্পের উদ্ভাবন করেছি। এর মধ্যে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় বিদ্যুতিক পাম্প ও স্বয়ংক্রিয় রাস্তার বাতি। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অ্যাডভান্স সৌরবিদ্যুৎ ও উইন মিল (বায়ু বিদ্যুৎ)।
সে আরও বলে, পানি অপচয় ও বিদ্যুৎ অপচয় রোধে কাজ করে স্বয়ংক্রিয় বিদ্যুতিক পাম্প এবং স্বয়ক্রিয় সড়কবাতি কাউকে পরিচালনা করতে হবে না। আলো পেলে বন্ধ হয়ে যাবে আর অন্ধকার হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতি জ্বলতে শুরু করবে। আধুনিক সৌরবিদ্যুতের প্রকল্পের কাজ হলো সূর্য উঠলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে সৌরবিদ্যুতের কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। আর অল্প জায়গায় অনেকগুলো সৌরবিদ্যুতের প্ল্যাটগুলো স্থাপন করা যায়। এছাড়া সূর্য যেদিকে যাবে সৌরবিদ্যুতের প্ল্যাটগুলোও সেদিকে ঘুরতে থাকবে। আর উনি মিলের বিষয়টি হচ্ছে বাতাস যেদিকে থাকবে সেদিকে স্বয়ংক্রিয় গিয়ে পাখাগুলো ঘুরতে থাকবে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের মেধার সুষ্ঠু বিকাশ ঘটাতে ও পড়াশোনা করার আগ্রহ আরও বেশি তৈরি করতে এ আয়োজন করা হয়েছে। আমরা গত শনিবার (৮ অক্টোবর) থেকে বিজ্ঞান মেলা, গণিত অলিম্পিয়াড ও শিশুদের জন্য সাধারণ জ্ঞ্যান প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। এ আয়োজনটি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও উপভোগ করছেন এবং তারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এ আয়োজনে যারা বিজয়ী হবে তাদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করেছি। সেইসঙ্গে বিভিন্ন বিজ্ঞান জাদুঘরে ঘুরিয়ে আনা হবে।
স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্কুলের চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু মিলে ২০০১ সালে এ স্কুলটি তৈরি করেছি। আমি নিজেই একজন বিজ্ঞানের ছাত্র। আমি জানি যে বিজ্ঞানের মহত্ত্ব বা বিজ্ঞানের দরকারটা কী। সেই থেকেই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিজ্ঞানমুখী করার জন্য আমাদের এ আয়োজন। শ্রেণির পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার জন্য জড়িত করছি। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন টিম বিশ্ব পর্যায়ে বিজ্ঞান প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করেছে। সেখান থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছি যেন আমাদের ছেলে-মেয়ে তৈরি হয়ে বিশ্বে একটি নাম তৈরি করতে পারে এবং তারা যেন ভবিষ্যতে একজন বিজ্ঞানী হিসেবে ভবিষ্যতে একটি পরিচিত লাভ করতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০২২
এসএফ/আরবি