ঢাকা: ডিমের বাজার ব্যবস্থাপনায় সিন্ডিকেট বা কোন অব্যবস্থাপনা থাকলে তা দূর করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) ডিম দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে এক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
এসময় ডিমের বাজারে সিন্ডিকেট ও অব্যবস্থাপনা বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনা এ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ নয়। আমরা এ ব্যবস্থাপনায় যারা সম্পৃক্ত, তাদের সঙ্গে কথা বলে যদি কোন সিন্ডিকেট বা অব্যবস্থাপনা থাকে, তবে তা দূর করার চেষ্টা করবো। এছাড়া ডিমের উৎপাদনে যা ব্যয় হচ্ছে তা তো তুলতেই হবে। তবে অতি মুনাফালোভীদের দূরে রাখতে হবে।
ডিমের দাম সবার জন্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে কোন উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটা আপেক্ষিক। সবার ক্রয় ক্ষমতা তো এক নয়, একেক জনের একেক রকম। তবে রাষ্ট্র চেষ্টা করছে এ সেক্টরে যারা কাজ করে তাদের সহায়তা করতে। সবটা আমাদের হাতে সবসময় থাকে না। আমাদের যে কাজ সেখানে কোন ঘাটতি আছে কি না দেখেন। রাষ্ট্রেরও সীমাবদ্ধতা আছে। চাইলেই সবকিছু করা যায় না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ ম রেজাউল করিম বলেন, ডিমকে কেন্দ্র করে শঙ্কা দূর করা হয়েছে। কিছু সমস্যার কথা এসেছে সেগুলো আমরা দূর করবো। ডিম ও মাংসে যে যোগান এসেছে তা আমাদের জাতি হিসেবে খাবারের চাহিদা মেটাতে সহায়তা করেছে। ডিমের উৎপাদনে যে মূল্য বেড়েছে করোনা পরিস্থিতি এ সেক্টরকে অনেক সাফার পোহাতে হয়েছে সেজন্য। আমরা প্রত্যন্ত পর্যায়ে প্রণোদনাও দিয়েছি। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে তারা কারসাজি করে। আমরা ভর্তুকি না দিয়েও অনেক আইটেম রেশনিং সিস্টেমেমে দিয়েছি। এটা তো সবসময় সম্ভব না। তবে যারা বাজার ব্যবস্থাপনা করে তারা উদ্যোগ নিলে অনেককিছুই সম্ভব।
আলোচনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন মৎস্য প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, বাংলাদেশ প্রাণি সম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, বারডেম হাসপাতালের পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন নাহার নাহিদ (মহুয়া), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. বজলুর রহমান মোল্লা সভাপতিত্ব করেন প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা।
বক্তারা বলেন, দ্রুত শক্তি পেতে ডিম অনেক উপকারী। এতে রয়েছে ভিটামিন বি, যা শরীরে বাড়তি শক্তি জোগায়। প্রতিদিন সকালের নাশতায় একটি করে সেদ্ধ ডিম, একটি ক্লান্তিহীন একটি দিনের সহায়ক। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। যা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে কার্যকরী। সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় শেষে অনেকেই পেশি ব্যথায় ভোগেন। এ ক্ষেত্রে ডিম উপকারী। কারণ ডিমে প্রচুর ভিটামিন ডি রয়েছে যা পেশি মজবুত করে। অনেকেই ঘন ঘন সর্দি-কাশি বা জ্বরে ভোগেন। তারা ডিম খেতে পারেন। কারণ ডিমে রয়েছে জিংক যা দেহের ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।
তারা বলেন, ডিমে থাকা ফসফরাস হাড় ও দাঁত মজবুতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে ডিম খান। ডিমে রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড যা প্রোটিনের মূল উৎস। তাই প্রোটিনের ঘাটতি মেটাতে ডিম খান। অনেকেই ভাবেন ডিমের সাদা বা হলুদ শুধু একটা অংশ খাবেন, তাদের বলা বাহুল্য যে ডিমের দুই অংশই অনেক গুরুত্বপূর্ণ এখানে আলাদা করার কিছু নেই।
আলোচনা সভা শেষে ডিম উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ‘প্রতিদিন একটি ডিম, পুষ্টিময় সারাদিন’ প্রতিপাদ্যে এবারের বিশ্ব ডিম দিবস পালন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২২
এইচএমএস/এনএইচআর