ঢাকা: মাস্টার অব অ্যাপ্লাইড ফাইন্যান্স অ্যান্ড ক্যাপিটাল মার্কেটের (এমএএফসিএম) কোর্স ফি ৫০ শতাংশ কমিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম)।
বিআইসিএম পরিচালিত পুঁজিবাজার ও ব্যবহারিক অর্থায়নের ওপর দেশের প্রথম এবং একমাত্র স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম এটি।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে পল্টনে বিআইসিএমের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার।
বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার জানান, মোট ৫১ ক্রেডিটের এই মাস্টার্স প্রোগ্রামের প্রতি ক্রেডিট ফি ৪ হাজার টাকা। এর ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআইসিএম।
তিনি বলেন, চলমান অর্থনৈতিক অবস্থায় সাধারণ মানুষের জন্য যাতে এই মাস্টার্স করাটা সহজতর হয়, সেই চিন্তাধারা থেকেই এই ফি ছাড়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে করে প্রায় আড়াই লাখ টাকার প্রোগ্রাম ফি এক লাখ ৪০ হাজার টাকায় নেমে আসবে। তবে শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ফি আলাদাভাবে দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশের কাতারে আসীন করতে হলে প্রয়োজন দ্রুত শিল্পায়ন ও বৃহদাকারের অবকাঠামো, ও টেকসই উন্নয়ন। আর এজন্য দরকার দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সহজ ব্যবস্থা। একটি গতিশীল ও ক্রমপ্রসারমান পুঁজিবাজার ছাড়া এই অর্থায়নের যোগান দেওয়ার আর কোন সহজতর উপায় নেই। আর এই পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজন প্রশিক্ষিত ও দক্ষ মানব সম্পদ। বিআইসিএম তার শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে, দেশের পুঁজিবাজারের বিকাশের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে, এই দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল তৈরিতে সরাসরি ভূমিকা রেখে চলেছে।
মাহমুদা আক্তার বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে যখন পুরো বিশ্ব ঘুরে দাঁড়াবার জন্য তৈরি হচ্ছিল ঠিক তখনই বিশ্ব রাজনীতিতে অস্থিরতার কালো মেঘ, ইউক্রেন – রাশিয়া যুদ্ধ এবং এর ফলশ্রুতিতে আরও অনেক অস্থিরতায় বিশ্ব এখন এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বাংলাদেশেও পড়েছে এই অস্থিরতার ছাপ। দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি শ্লথ হয়ে গেলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে পড়বে এর বিরুপ প্রভাব। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সহযোগী হিসেবে একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ার প্রত্যয়ে এই ফি ছাড়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং বিআইসিএমের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম উপস্থিতে অনুষ্ঠিত বিআইসিএম'র পরিচালনা পর্ষদ সভায়, ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কোর্স ফি কমানোর সিদ্ধান্ত হয়।
ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিনিধি এই কোর্স ফি ছাড় প্রদানের জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মাহমুদা আক্তার আরও জানান, পুঁজিবাজার সম্পর্কিত গবেষণার কাজ জোরদার করতে ইন্সটিটিউটের রিসার্চ অ্যান্ডাওমেন্ট তহবিল থেকে বার্ষিক গবেষণা মঞ্জুরী (এনুয়াল রিসার্চ গ্র্যান্ট) ২০২২ প্রদানের কাজ খুব শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে। দুইটি ক্যাটাগরিতে (স্ট্যান্ডার্ড এবং আর্জেন্ট) এই গবেষণা মঞ্জুরী পাবে বাছাই করা ব্যক্তি পর্যায়ের গবেষক, গবেষণা টিম, এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এ সপ্তাহের মধ্যেই গবেষণা পত্র আহ্বান করে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি আকারে তা প্রকাশ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) সভাপতি জিয়াউর রহমান, বিআইসিএমের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) নাজমুল সালেহীন উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত জাতীয় প্রতিষ্ঠান বিআইসিএমের এমএএফসিএম প্রোগ্রামে চার সেমিস্টারে এতোদিন শিক্ষার্থীদের প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হতো। কোর্স ফি অর্ধেক করায় এখন শিক্ষার্থীদের খরচ কমে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় নেমে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২২
এসএমএকে/এএটি