ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরার দায়ে পাঁচ জেলেকে সাতদিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া একই সময় মাছ ধরার দুইটি নৌকা, তিন হাজার মিটার জাল ও ৫০ কেজি মাছ জব্দ করা হয়।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত উপজেলার মুহুরী প্রকল্প এলাকা থেকে চর খোন্দকার ও চর আবদুল্লাহ এলাকায় বড় ফেনী নদীতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম অনীক চৌধুরী ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা রা যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তূর্য সাহা বলেন, প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় বড় ফেনী নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষের জন্য নিষিদ্ধ সময়ে নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরার অভিযোগে আটক জেলেদের কাছ থেকে তিন হাজার হাজার মিটার অবৈধ জাল, দুটি নৌকা ও ৪০ কেজি ইলিশসহ ১০ কেজি অন্যান্য মাছ জব্দ করা হয়।
পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম অনীক চৌধুরী আটক জেলেদের দণ্ড দেন। দণ্ড প্রাপ্ত পাঁচ জেলে হলেন, মো. স্বপন (২৫), মো. কোরবান আলী (১৮), মো. সোহাগ (৩০), হাসান মিয়া (২৮) ও মো. মোস্তফা মিয়া (৩০)। তারা সবাই নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুসাপুর এলাকার বাসিন্দা।
তূর্য সাহা আরও বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ ও ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্নে করতে গত ৬ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টা থেকে দেশের সব নদী ও সাগরে টানা ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার।
এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বড় ফেনী নদীতে একদল জেলে মা ইলিশ ধরছিলেন। এ সময় মৎস্য বিভাগ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত যৌথভাবে অভিযানে গেলে পাঁচ জেলেকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম অনীক চৌধুরী মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইনে আটক পাঁচ জেলেকে সাতদিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
অভিযানে জব্দ করা মাছগুলো স্থানীয় এতিমখানায় বিতরণ করে জালগুলো জনসম্মুখে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। আটক নৌকা দুটিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন, মেরিন ফিশারিস কর্মকর্তা খাইরুল বাশারসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অভিযান পরিচালনায় সহায়তা করেন।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.খালেদ হোসেন বলেন, দণ্ড প্রাপ্ত জেলেদের শুক্রবার বিকেলে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও সক্রিয় রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, মা ইলিশ সংরক্ষণে গত ৬ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টা থেকে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। টানা ২২ দিন ইলিশ শিকার, বিপণন, মজুত ও পরিবহন বন্ধ থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২২
এসএইচডি/এসআইএস