ঢাকা: মাদকের আগ্রাসন রোধে গঠিত এনফোর্সমেন্ট কমিটি মাদকের হটস্পটগুলো চিহ্নিত করে সমন্বিতভাবে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরীর সই করা ওই সভার কার্য বিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সভায় জানানো হয়, কক্সবাজার ও টেকনাফের জন্য গঠিত টাস্কফোর্স পরিচালিত অভিযান দায়েরকৃত মামলা ও গ্রেফতারকৃত আসামিদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ১৪ হাজার ৭৩টি মামলা দায়ের এবং ১৫ হাজার ২৭০ জন মাদক চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়। এ সময়ে ২৭ লাখ ২৯ হাজার ৫০৩ পিস ইয়াবা, ৫ হাজার ২৩৯ দশমিক ৩৮৪ কেজি গাঁজা ও ১৯ হাজার ৪৬৪ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়াও কক্সবাজার ও টেকনাফে ২৫৪টি মামলা দায়ের করে ৩৩৯ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উক্ত সময়ে ১২ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। কক্সবাজার ও টেকনাফে ইয়াবা বিরোধী টাস্কফোর্সের নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে বলে কার্য বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়।
সভায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, মাদকের হট স্পটগুলো চিহ্নিত করে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। জুলাই পর্যন্ত ২ দশমিক ৮৭২ ক্রিস্টাল মেথ জব্দ করা হয়। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সভায় আরও জানানো হয়, মিয়ানমার সীমান্তে মাদক পাচারকারীরা এনপিটিসি সিম ব্যবহার করে পুলিশ, কোস্টগার্ড বিজিবিকে ফাঁকি দিয়ে তথ্য-আদান প্রদান করে যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করা হলে মাদক পাচারকারীরা তথ্য আদান-প্রদান করতে ব্যর্থ হবে। এজন্য সীমান্ত এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধের জন্য শক্তিশালী জ্যামার বসানো প্রয়োজন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কক্সবাজার ও টেকনাফের জন্য গঠিত টাস্কফোর্সের নিয়মিত অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখতে হবে। এলাকাভিত্তিক ম্যাপিং করে মাদকের হটস্পটগুলো চিহ্নিত করে সমন্বিতভাবে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখতে হবে।
মাদক পাচারকারীদের সহযোগী যারা মাদক সরবরাহের জন্য অর্থলগ্নী করে থাকেন তাদের চিহ্নিত করে একটি তালিকা তৈরির জন্য সব বাহিনী ও সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
সীমান্ত এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধের বিষয়টি মিয়ানমারকে অবহিত করা যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা হয় সভায়।
এদিকে বিটিআরসি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানায়, অপরাধ এবং চোরাচালান রোধে রোহিঙ্গা নাগরিকদের মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করে বাংলাদেশের সিম ব্যবহারেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা জানান, রোহিঙ্গাদের বিষয়টি স্পর্শকাতর। বিটিআরসি থেকে একটি কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। দেখতে পাওয়া গেছে অনেকেই মিয়ানমারের সিম ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে আমরা দেখছি তারা যেন মিয়ানমারের সিম ব্যবহার না করে। রাষ্ট্রের অনুমোদনক্রমে নির্দিষ্ট সিরিয়ালের সিমগুলো তাদের যদি দেই। আরও দেখা গেছে তারা অন্যের নামে বাংলাদেশের সিম ব্যবহার করছে। তাহলে আমরা অন্য সবগুলো সিম ব্যবহার বন্ধ করতে পারিছি এবং যেকোনো সময় তাদের চেক করতে পারছি যে কোন সিম ব্যবহার করছো, এই সিমগুলো ব্যবহার করবা। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২২
এমআইএইচ/আরআইএস