নারায়ণগঞ্জ: প্রেমিক নুর মো. দিপু অন্যত্র বিয়ে করায় আঁখি আক্তার (২০) নামে এক তরুণী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওই তরুণী আত্মহত্যার আগে তার ডায়েরিতে লিখে গেছেন ‘দিপু আমার সঙ্গে বেইমানি করেছে’।
মৃত আঁখি লালমনিরহাটের হাতিবান্ধার পশ্চিম ফকিরপাড়ার মো. আমিনুল ইসলামের মেয়ে। তারা পরিবারে পাগলা মধ্য রসুলপুরের মনিরের বাসায় ভাড়ায় বসবাস করে আসছিলেন।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) এ ঘটনায় আঁখির বড় ভাই মো. আব্দুল হালিম আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে প্রতারক প্রেমিক নুর মো. দিপুকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ফতুল্লা মডেল থানার পাগলা মধ্য রসুলপুর এলাকায়।
অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদ দিপু ফতুল্লা মডেল থানার পাগলা মধ্য রসুলপুর জসিম মার্কেটের বাবুল শেখের ছেলে। দিপু কাচপুর এলাকায় একটি কারখানায় চাকরি করেন।
মামলার বাদী ও নিহতের বড় ভাই মো. আব্দুল হালিম জানান, তার বোন আঁখি ঢাকার ধানমন্ডির ডিআইইউ ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তারা দুই বোন ও এক ভাই। পরিবারের সঙ্গে আঁখি পাগলা রসুলপুর এলাকায় বসবাস করতেন। দীর্ঘ চার বছর আগে একই এলাকার নুর মো. দিপুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে তাদের মধ্য শারীরিক সম্পর্কও হয়। ২০-২৫ দিন আগে তাদের পরিবারের লোকজন দিপুর পরিবারের সঙ্গে তার বোনের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলে উভয় পরিবারের সম্মত্তিক্রমে আগামী ১৭ নভেম্বর নিহত আঁখি ও দিপুর বিয়ের দিন ধার্য হয়। কিন্ত গোপনে ২১ অক্টোবর পরিবারের সম্মত্তিক্রমে দিপু অন্যত্র বিয়ে করেন। এতে করে তার বোন আঁখি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
শনিবার (২২ অক্টোবর) দিপুর সাথে তার বোন দেখা করে। সেখান থেকে ফিরে এসে আরো বেশি হতাশ হয়ে পড়েন আঁখি। রোববার তিনি নিজ কর্মস্থলে ছিলেন। তার বাবা অসুস্থ থাকায় রোববার দুপুর তিনটার দিকে তার মা ও এক চাচা অসুস্থ বাবকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ চাষাড়াস্থ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তারের কাছে যায়। অপর ছোট বোন কোচিংসেন্টারে পড়তে যায়। এ সময় বাসায় একাই ছিল আঁখি। তখন আঁখি ঘরের সিলিংফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন। বেলা পৌনে চারটার দিকে বাড়ির মালিকের স্ত্রী ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে মোবাইলফোনে বিষয়টি তার মাকে জানান। সংবাদ পেয়ে তারা সবাই ঘটনাস্থলে ছুটে এসে দেখতে পেয়ে পুলিশে সংবাদ দেয়। পুলিশ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, মৃত্যুর আগে তার বোন ডায়েরিতে লিখে যায় ‘দিপু আমার সাথে বেঈমানি করেছে’।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা জানান, সংবাদ পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে সুরহতাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের প্রেমিককে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
এমআরপি/এএটি