বরগুনা: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বরগুনায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৬২ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
সোমবার ( ২৪ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বরগুনার রোববার দিবাগত রাত থেকে একটানা হালকা থেকে মাঝারি আকারের ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে বরগুনার সকল রুটে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (পিপিপি) এর এক উপ-পরিচালক জানিয়েছেন, বরগুনার বেতাগী এবং বামনা উপজেলা ব্যতীত জেলার বাকি চার উপজেলায় মোট ৮ হাজার ৪৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। আমরা বিভিন্ন চর ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদে আনতে সহায়তা করেছি।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি এড়াতে বরগুনা জেলার প্রায় চার লাখ মানুষের জন্য ৬৪২টি সাইক্লোন শেল্টার (আশ্রয়কেন্দ্র) খুলে দেয়া হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ৬২ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে সক্ষম হয়েছি আমরা । এছাড়াও ২৫ মেট্রিক টন চাল, ১ হাজার কার্টন শুকনা খাবার, বিস্কুটের প্যাকেট ৭০০টি, টিন ১৯০ বান হাতে আছে। প্রয়োজনে আরও বরাদ্দ দেয়া হবে। জেলা ও উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলার সব সরকারি কর্মকর্তাদের নিজ নিজ দফতরে অবস্থান করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়। চর ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদে আনা ও সতর্কসংকেত প্রচারে জেলার ১২ হাজার সিপিপির প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে।
আবহাওয়া অফিসে তথ্য অনুযায়ী, উপকূলীয় জেলা বরগুনায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এতে বিআইডব্লিউটিএ থেকে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে ক্ষয়-ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে পাথরঘাটা ও তালতলী উপজেলার ও সদর উপজেলার মানুষের।
এর আগে গত ২০২০ সালের ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্পানের আঘাতে বরগুনার পাথরঘাটা এবং তালতলী উপজেলার সব ইউনিয়ন, বেতাগী উপজেলার এক তৃতীয় অংশ, সদর উপজেলার বদরখালী, ৭ নম্বর ঢলুয়া, আয়লা পতাকাটা ও ফুলঝুড়ি ইউনিয়ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলায় বরগুনা জেলায় বেড়িবাঁধের বাইরে ও চরাঞ্চলের এলাকাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরে জেলার প্রায় দুই শতাধিক মানুষ মারা যান।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
এমএইচএম