ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভুয়া ইন্সুরেন্স কোম্পানির নামে প্রতারণা, চক্রের ১৫ সদস্য গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২২
ভুয়া ইন্সুরেন্স কোম্পানির নামে প্রতারণা, চক্রের ১৫ সদস্য গ্রেফতার গ্রেফতার আসামিরা।

ঢাকা: ভুয়া ইন্সুরেন্স কোম্পানি খুলে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া একটি প্রতারক চক্রের ৫ রিং লিডারসহ ১৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৪)। প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ সামগ্রী উদ্ধার করে র‌্যাব-৪।



গ্রেফতার প্রতারক চক্রের সদস্যরা হলেন- মো. এরশাদ শেখ (৩১), নাঈম শেখ (২৬), শহিদুল্লাহ (২৩), ইলিয়াস আহম্মেদ (২৫), জামাল উদ্দিন (৫২), জিয়াউর রহমান (২৫), মহসিন কবির (৪২), কামরুল শেখ (১৯), আজিজুল ইসলাম (২০), হুমায়ূন শেখ (২১), রাহাত ওরফে অনিক (১৯), মাওলানা মাইনুদ্দিন (২৩), বারহাম মিয়া (২০), হিজবুল্লাহ (১৯) ও চাঁন মিয়া (১৯)।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানাধীন শিমুলতলা সুপার মার্কেটের পাঁচতলা বিল্ডিংয়ের চারতলায় অবস্থিত ‘জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড’ এ অভিযান পরিচালনা করে একটি প্রতারক চক্রের ৫ রিং লিডারসহ ১৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

অভিযানে একটি সিপিইউ, ১টি মনিটর, ২টি প্রিন্টার, ১৫টি রেজিস্টার, ১৪টি মোবাইল, ১৪টি সিমকার্ড, ৯টি সিল, ৩০টি ভিজিটিংকার্ড, ৪টি আইডিকার্ড, ২টি ব্যানার, ২৫০টি বায়োডাটা ফরম, ২০০টি লিফলেট, ১টি ক্যাশ ভাউচার এবং ৮টি আবেদন ফরম জব্দ করা হয়।

তিনি জানান, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি নামে একটি ভুয়া রেজিস্ট্রেশনবিহীন আর্থিক কোম্পানি ব্যবসার আড়ালে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তিকে কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামিরা প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

প্রতারণার কৌশল:

র‌্যাব-৪ এর সিও জানান, এই প্রতারক চক্র জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বিভিন্ন পদে ফুল-টাইম, পার্ট-টাইম চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছে। বিজ্ঞাপন দেখে চাকরিপ্রত্যাশী শত শত তরুণ-তরুণী ও ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের এহেন বিজ্ঞাপন সরলমনে বিশ্বাস করে। প্রথমে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি হিসেবে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫২০ টাকা করে নিত। পরে চাকরির নিশ্চয়তা ও মোটা অংকের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ১০/২০ হাজার টাকা নিয়ে ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে পলিসি খুলতে বাধ্য করত। ইউনিট ম্যানেজার, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার প্রভৃতি পদে ১৮ হাজার ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ইন্সুরেন্স করাতে প্রলুব্ধ করত।

তিনি জানান, চাকরি পাওয়ার পর মাসের পর মাস অফিসে আসা-যাওয়া করে বেতন না পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকে প্রদেয় টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে ভয়-ভীতি, মারধর এমনকি প্রাণ নাশের হুমকি দিতেন চক্রের সদস্যরা।

এই প্রতারক চক্র এর আগেও প্রতারণার দায়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২২
এসজেএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।