ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে সোমবার দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। রাতে বৃষ্টির সঙ্গে যোগ হয় দমকা হাওয়া।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে চামড়ার মানিব্যাগ, হেডফোন এ জাতীয় পণ্য বিক্রি করেন আকরাম হোসাইন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এখানে বসার জন্য নির্দিষ্ট ভাড়া দিতে হয়। কাকে ভাড়া দিতে হয়, এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেলেও তিনি বলেন, গত পরশু দিন থেকেই বৃষ্টির জন্য দোকানটা খুলতে পারিনি। ভাড়া কিন্তু ঠিকই দিতে হয়েছে৷ খাওয়া-দাওয়াও কষ্ট করেছি। আমরা তো ভাই দিনে আনি দিনে খাই। একদিন ব্যবসা বন্ধ থাকলে খাবার জোগাতেই কষ্ট হয়।
একই এলাকার ফুটপাতে কাপড় বিক্রি করেন মনিরুল ইসলাম। কথা হয় তার সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, গতকাল বৃষ্টির মধ্যেই ত্রিপল টানিয়ে পসরা বসাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, কাপড়গুলো ভিজে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে গুছিয়ে নিয়ে চলে গেছি। এক দোকানে বাকি ভাত খাই। টেনশনে আছি। এমনিতেও বেচাকেনা কম। এর মধ্যে এই দুর্যোগ৷
প্রায় একই কথা বললেন ফুটপাতের চা দোকানি জহির। তিনি দোকান ভাড়া দেন দৈনিক আড়াইশো টাকা। জহির বলেন, গত দুইদিন ধরে দোকান বন্ধ রেখেছি। খুলতে চেয়েছিলাম। বৃষ্টির ছাঁটে ভিজে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বন্ধ করেছি। এদিকে জিনিসপত্রের যা দাম। কী করবো বুঝতে পারছি না।
জসিম উদ্দিন একজন দিনমজুর। দৈনিক ভিত্তিতে ইটভাঙা থেকে শুরু করে সব কাজ করেন তিনি। কথা হলে জসিম বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি রাজশাহী। ঢাকায় ১৫ দিনের জন্য আসি। কিছু টাকা-পয়সা কামাই হলে বাড়িতে পরিবারের হাতে তুলে দেই। এখানে একটা বস্তিতে থাকি। কোনো কাজ নেই। খাওয়া-দাওয়ায় কষ্ট পাচ্ছি৷ বলতে-বলতে চোখ ভিজে ওঠে তার।
ষাটোর্ধ্ব রিকশাচালক আলতাফ মিয়া বলেন, আবহাওয়া খারাপের জন্য দুইদিন বের হই নাই। শরীরটাও খারাপ। জমার টাকা দিতে পারি নাই। মালিক রাগারাগি করেছেন। আজ তাই বের হয়েছি।
আজ সকাল থেকেই ঘূর্ণিঝড়জনিত বৃষ্টি কমেছে। তবে, বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা এবং আবহাওয়া এখনো দুর্যোগপূর্ণ হওয়ায় বিপাকে আছেন এসব মানুষ। অনেকেরই পসরা সাজনোর জায়গাটিতে জমে আছে পানি।
সব জিনিসের বাড়তি দাম, এদিকে কাজ করতে না পারায় দিশেহারা শহরের খেটে খাওয়া মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২২
এমকে/এসআইএস