ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নিষেধাজ্ঞাই ছিল সিত্রাংয়ে জেলেদের জন্য আশীর্বাদ

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২
নিষেধাজ্ঞাই ছিল সিত্রাংয়ে জেলেদের জন্য আশীর্বাদ

বরগুনা: উপকূলে চালানো ধ্বংসযজ্ঞ অপেক্ষা গভীর সমুদ্রে বেশ ভয়ঙ্কর ছিল ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। তবে সমুদ্রে মাছ শিকারে চলমান নিষেধাজ্ঞার কারণে অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে এবারের এ ঘূর্ণিঝড় সমুদ্রগামী জেলেদের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি করতে পারেনি।

গভীর সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে জেলেরা উপকূলে নিরাপদ আশ্রয়ে আগে থেকেই ছিলেন। এতে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি এই দুর্যোগের মধ্য।

মা ইলিশ রক্ষায় চলতি মাসের ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য সাগর ও নদ-নদীতে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার।

নিষেধাজ্ঞার ১৮ তম দিন সোমবার (২৪ অক্টোবর) দেশের উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। কিন্তু সমুদ্রগামী জেলেরা নিষেধাজ্ঞা থাকায় বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে না গিয়ে আগে থেকেই তীরে নিরাপদে অবস্থান করছিলেন। এতে করে এবার ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন জেলেরা।

পাথরঘাটায় উপজেলার জেলে লালমিয়া ফকির বাংলানিউজকে বলেন, সামান্য ঝড়েও সাগরে টিকে থাকা দায়। চুবানি খেতে হয়। কিন্তু এবার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সাগরে মাছ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে হওয়ায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি আমরা জেলেরা।

পাথরঘাটা উপজেলার জেলে ইয়াকুব আলী বাংলানিউজকে বলেন, এই প্রথম কোনো সিগন্যালের সময় আমরা সাগরে ছিলাম না। থাকলে এবার হয় ডুবে যেতাম, নয়তো কোথাও ভেসে যেতাম।  

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, দুর্যোগের জেলা হলেও বরগুনায় কোনো আবহাওয়া অফিস নেই। তাই ঘূর্ণিঝড়ের সময় আমরা দ্রুত সঠিক পূর্বাভাস পাই না। যার কারণে সমুদ্রগামী জেলেদের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এবার নিষেধাজ্ঞা ছিল বলে জেলেদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। একজন জেলেও ছিলেন না সাগরে, নিষেধাজ্ঞাই আশীর্বাদ হয়েছে।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। ঘূর্ণিঝড়টির আঘাত হানার মূল কেন্দ্র উপকূলীয় বরগুনা থাকলেও পার্শ্ববর্তী ভোলা উপকূল দিয়ে অতিক্রম করে৷ এ ঝড়ের আঘাতে বরগুনা সদরে ঘরের ওপর গাছ পড়ে শতবর্ষী এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে আর সারা দেশে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। তবে ফসলি জমি ও বেড়িবাঁধের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২ 
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।