চাঁদপুর: চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় মা ইলিশ রক্ষার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে ইলিশ আহরণে নামবেন জেলেরা। ইতোমধ্যে জেলেরা তাদের মাছ ধরার নৌকা মেরামত ও জাল প্রস্তুত করেছেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলার মেঘনা উপকূলীয় জেলে পাড়াগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে জেলেরা ইলিশ ধরার জন্য নতুন জাল প্রস্তুত করছেন। আবার অনেকেই নৌকাগুলো মেরামত করছেন এবং নৌকার মধ্যে ইঞ্জিন বসাচ্ছেন। তাদের এই প্রস্তুতির কাজে পরিবারের ছোট বড় সব সদস্যরাই সহযোগিতা করছেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের জেলে আলমগীর দেওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, সরকার মা ইলিশ রক্ষায় যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা আমরা মেনেছি। আমরা নদীতে নামিনি। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু ও মৌসুমী জেলে ঠিকই মা ইলিশ নিধন করেছেন।
একই এলাকার জেলে জাহাঙ্গীর ও মজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বছরে দুইবার ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা দেয়। আমরা সব কিছুই মানি। কিন্তু এই সময় আমাদের সংসার চলে না। প্রতিবছর এ সময়টা আমাদের সংসার চালাতে কষ্ট হয়। ঋণ করে চলতে হয়। বছর শেষে দেখা যায় একেকজন ২০-৩০ হাজার টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ি। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে যে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়, তা সঠিক ওজনে পাওয়া যায় না।
তারা বলেন, বর্তমান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিসিনপত্রের যে দাম, ২৫ কেজি চাল দিয়ে ৫-৭ জনের সংসার চালানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সরকার আমাদের বিষয়ে আরো দৃষ্টি দেওয়া দরকার।
পাশবর্তী চান্দ্রা ইউনিয়নের আখনের হাট এলাকার জেলে মোহাম্মদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মা ইলিশ ধরি না। কিন্তু নিরাপদে মা ইলিশকে ডিম ছাড়ার সুযোগও দিচ্ছেন না এক শ্রেণির জেলে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে বলেন, চাঁদপুর জেলায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযান আমরা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যারা নদীতে নেমেছেন তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা টাস্কফোর্স যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেসব সিদ্ধান্ত আমরা শতভাগ বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি। জেলেদেরকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি ইলিশের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
এসআইএস