ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

২ ভাইকে এসিড নিক্ষেপ: কনস্টেবলকে গ্রেফতারের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
২ ভাইকে এসিড নিক্ষেপ: কনস্টেবলকে গ্রেফতারের দাবি মানববন্ধন।

কক্সবাজার: কক্সবাজারের রামুতে দুই  ভাইকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনার প্রতিবাদে ও এর সঙ্গে জড়িত পুলিশের কনস্টেবল নিখিল বড়ুয়াসহ জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন এসএসসি ২০০৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে রামু চৌমুহনী স্টেশনে এ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচিতে রামু প্রেসক্লাব, ছাত্রলীক রামু উপজেলা ছাত্রলীগ, রামু চৌমুহনী বণিক সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সংহতি প্রকাশ করেন।

সমাবেশে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে পুলিশ সদস্য নিখিল বড়ুয়ার শাস্তির দাবি এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। অন্যতায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ঘরে ফেরার পথে রামুর প্রধান বাণিজ্যিককেন্দ্র চৌমুহনী স্টেশনের ভিক্টর প্লাজার সামনে পুলিশ সদস্য নিখিল বড়ুয়াসহ আরও কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশার ওপর থেকে টিপু বড়ুয়া ও দিপক বড়ুয়াকে এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এতে তাদের শরীর ঝলসে যায়। এখন তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। শুধু তাই নয়, এ ঘটনার প্রায় এক মাস আগে রাতে বাড়ি ফেরার পথে একইভাবে ওই দুইজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।

বক্তাদের দাবি, নিখিল বড়ুয়া নামের এক কনস্টেবলের এসিড সন্ত্রাসের মূলহোতা। নিখিল চট্টগ্রাম সিআইডিতে কর্মরত থাকলেও ছুটিতে এসে এলাকায় এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করছেন।  

এসএসসি ২০০৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রামু ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুট্টো।

এ সময় অন্যাদের মধ্যে রামু প্রেসক্লাব সভাপতি নীতিশ বড়ুয়া, জেলা যুবলীগ নেতা পলক বড়ুয়া আপ্পু, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বিপুল বড়ুয়া আব্বু, ইউপি সদস্য ও রামু বণিক সমিতির নেতা আজিজুল হক আজিজ, এসিড সন্ত্রাসের শিকার টিপু বড়ুয়া মা প্রকৃতা বড়ুযা প্রমুখ বক্তব্য দেন।  

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করে ছাত্রলীগের যুগ্ন আহ্বায়ক ও এসএসসি ২০০৫ ব্যাচের সদস্য জিৎময় বড়ুয়া।

সমাবেশে তারা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য নিখিল বড়ুয়ার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাসহ অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।

এসিড সন্ত্রাসের শিকার টিপু রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের দ্বীপ শ্রীকুল গ্রামের নিরধন বড়ুয়া আর দিপক একই গ্রামের শুভধন বড়ুয়ার ছেলে। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। আর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য নিখিল তাদের ভগ্নিপতি।

পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটাচ্ছে এ কথা জানিয়ে এসিড সন্ত্রাসের শিকার ভুক্তভোগী টিপু মোবাইলফোনে জানান, নিখিল তার ছোট বোনের জামাই। তার বোনকে বিয়ে করার কয়েক বছর পর ২০১৯ সালে আরেকটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তার বোনকে বাদী বানিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করলেও তাকে ডিভোর্স দেন নিখিল। কিন্তু এর মধ্যে তিনি আমার ভাই, ভাইপো, চাচাসহ পরিবারের অনেক জড়িয়ে মিথ্যা মামলা করেন। এ অবস্থায় আমার বোনকে ম্যানেজ করে তার বিরুদ্ধে করা মামলাটি আপস করেন। এরপর থেকে নিখিল আমাকে হত্যার জন্য নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন এবং এক মাসের মধ্যে দুইবার হামলা চালায়। সর্বশেষ আমাদের এসিড নিক্ষেপ করেন।

রামু প্রেসক্লাবের সভাপতি নীতিশ বড়ুয়া জানান, আমরা বিভিন্নভাবে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি, পারিবারিক কলহের জেরে কনস্টেবল নিখিল এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এর আগে ছুরিকাঘাতের ঘটনার নেপথ্যেও আছে নিখিলের। যত দূর জেনেছি, নিখিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইসি) চট্টগ্রামে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত আছেন। পুলিশ সদস্য হয়ে এসিড সন্ত্রাসের মতো অপরাধে জড়ানোর বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

সভাপতির বক্তব্যে ফতেখাঁকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল হক ভুট্টো বলেন, অপরাধী পুলিশ সদস্য হউক বা অন্য কেউ হউক, অপরাধীরা দেশ ও সমাজের শত্রু। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, রামুতে এসিড সন্ত্রাসের মতো ঘটনা কোনো দিন ঘটেনি। এটি শান্ত রামুকে কলংকিত করেছে। আশা করছি, আইন-শৃংখলাবাহিনী জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
এসবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ