ফরিদপুর: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভা ৭ নম্বর ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সীমানা ঘেঁষে বসতবাড়ি নির্মাণের অজুহাতে সরকারি খালের জায়গায় জুড়ে মাটি ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে ভরাটের কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই খাল সংলগ্ন সড়কে পানি জমে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, খাল ভরাট করায় পৌরসভার বাকাইল মেইন রোডের বিশ্বাসপাড়া জামে মসজিদের পাশ দিয়ে গোপালপুর পাগলের আস্তানা পর্যন্ত পাকা রাস্তায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। এদিকে, খালের কিছু অংশ এখনো দৃশ্যমান আছে। যার নিদর্শন হিসেবে এখনো আস্তানার পাশে প্রধান রাস্তায় একটি ব্রিজ রয়েছে। কিন্তু সেই ব্রিজ থেকে দক্ষিণে ননী গোপাল বিশ্বাসের বাড়ি পর্যন্ত সরকারি প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ফুট চওড়া খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় ওই অংশে খালের কোনো সাদৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না।
পথচারীরা জানান, এই লিংক রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ চলাফেরা করে। কিছু পরিবার সরকারি খালের জায়গায় মাটি ভরাট করে বসতবাড়ি হিসাবে ব্যবহার করায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে পাকা রাস্তার ওপর হাটু পানি জমে। এর ফলে অচিরেই পাকা রাস্তাটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই হাটু পানি বেঁধে যাওয়ায় আমাদের ভীষণ দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
ওই পথে নিয়মিত চলাচলকারী রাকিব শেখ, সায়েম খান ও আয়সা আক্তার নামে এক কলেজ ছাত্রী বলেন, সামান্য বৃষ্টি-বাদল হলে যানবাহন এমনকি খালি পায়েও চলা দায়। জুতা-স্যান্ডেল খুলে হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এই দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ চান তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা পলাশ সাহা ও প্রসান্ত রায় অভিযোগ করেন, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যাক্তি আজিজার বিশ্বাস, পরিমল সাহা, রাজ্জাক বিশ্বাস, বিধান পাল, সরোয়ার শেখ, প্রদীপ পাল ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ জায়গায় বিল্ডিং করার অজুহাতে সরকারি খালের মধ্যে মাটি ফেলায় সেটি ভরাট হয়ে এই দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে দ্রুত সরকারি খালের জায়গা দখলমুক্ত করে জন দুর্ভোগের হাত থেকে পরিত্রাণ দেওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের মধ্যে প্রদীপ পাল বলেন, আসলে ওখানে একটি খাল ছিল। ৬ শতাংশ জায়গার ওপর আমি একটি ভবন নির্মাণের কাজ করছি। ভবনের কাজ করতে গিয়ে কিছু মাটি খালের মধ্যে চলে গেছে এটা ঠিক। খালটি আমি ভরাট করিনি। নির্মাণ সামগ্রী, বালু, খোয়া, মাটি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। আমার ভবনের কাজও প্রায় শেষের দিকে। কাজ শেষে আমি খালের স্থানটি মাটি কেটে পরিষ্কার করে দেব।
এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. সাইফুর রহমান সাইফার বলেন, এখানে একটি খাল ছিল। আমি মেয়রের দ্বায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই খালটি বেদখলে রয়েছে। খালটি পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, পাঁকা ভবনের কাজ করতে গিয়ে মাটিতে খাল ভরাট হয়ে গেছে। এই এলাকায় আমি একাধিকবার ড্রেনের প্রকল্প দিয়েছি। প্রকল্প ব্যয় বেশি হওয়ায় পাস হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২২
এনএটি