ঢাকা, বুধবার, ১৪ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গ্যাসের সংকটে নাকাল দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দারা

দেলোয়ার হোসেন বাদল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০২২
গ্যাসের সংকটে নাকাল দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দারা

ঢাকা: সকাল ৭টা বাজলেই গ্যাস চলে যায়। আসে সেই রাত নয়টায়।

সারাদিনে রান্না বন্ধ। হয়তো ভোর ৫-৬টায় রান্না বসাতে হয়। নয়তো রাত ৯ টার পর রান্না করতে হয়। ভোরে উঠে রান্না করতে না পারলে সারাদিন হোটেল থেকে কিনে এনে খাবার খেতে হয়। এভাবে কি জীবন চলে? পানি নাই,বিদ্যুত নাই আর গ্যাসের সমস্যাতো এখন  সারা বছরেরই সমস্যা। এক কথায় শহুরে জীবনের নাম এখন ভোগান্তি ছাড়া কিছুই যেন নাই। এমন ভাবেই অভিযোগগুলো বলছিলেন ডিএসসিসির কদমতলী থানার মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা শিউলি আহমেদ।

তার মতোই অভিজ্ঞতা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আশপাশের বাসিন্দাদের।  

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জুরাইন, শ্যামপুর, মুরাদপুর, পোকার বাজার,শনির আখড়া,যাত্রাবাড়ী, কাজলা, মুগদা, কমলাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের তীব্র সংকট। এলাকাবাসীর অভিযোগ পূর্ণ বিল পরিশোধ করেও পর্যাপ্ত গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না।  

শ্যামপুর লাল মসজিদ এলাকার বাসিন্দা মনিরা জামান জানান, সকাল ৭টা বাজলেই নিভু নিভু গ্যাস থাকে। সাড়ে ৭টায় একদমই থাকে না। কোনো রকম খেয়ে দিন কাটলেও দুপুরের খাবার খাওয়া হয় বিকেল সাড়ে ৫টার পরে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে।

অনেকে রান্নার জন্য রাত জাগছেন। আবার অনেকে একইবার রান্না করে ফ্রিজে রেখে দিয়ে ওভেনে গরম করে কয়েক বার সেই খাবার খাচ্ছেন।

এতে করে গুনতে হচ্ছে মোটা টাকার বিদ্যুত বিল অন্যদিকে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। ফলে নারীদের জন্য  এটা একটা আলাদা ভোগান্তি।

মুগদা এলাকার বাসিন্দা  মাজেদা বেগম বলেন, গত কয়েকবছর ধরে  আমরা গ্যাসের তীব্র সংকটের মধ্যে আছি। আগে দুপুরে কিছুটা গ্যাস পাওয়া যেত কিন্তু এখন সেটাও পাওয়া যায় না। ভোর ৪টা অথবা ৫টায় না উঠলে আমাদের বাসায় রান্নাই করা হয় না। বিকেলে সাড়ে ৫টার পর কিছুটা গ্যাস থাকলেও সন্ধ্যার পর পর এটা একেবারেই কমে যায়। রাত ১১টার আগের গ্যাসের কোনো খোঁজ পাই না। রাতে আমাদের ঘুমাতে ঘুমাতে সাড়ে ১২টা-১টা বেজে যায়। আমাদের আবার উঠতে হয় ভোর ৪টা-৫টায়। এতে করে পরিবারের সবারই শরীরে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে।  কিন্তু গ্যাস না থাকলেও আমাদের গ্যাসের বিল ঠিকই দিতে হচ্ছে।

গ্যাস সংকটের কারনে পোকারবাজার এলাকার অনেক বাসায়  মাটির চুলা অথবা স্টপে রান্না করে থাকেন। এলাকাবাসী বলেন, যে হারে জিনিসপত্র আর কেরোসিন তেলের দাম বাড়ছে, এতে সবারই ডাবল টাকা খরচ হচ্ছে। গ্যাস না থাকায় কেরোসিন দিয়েই রান্না করতে হয়। আবার সবজির দামও বেশি। সব মিলিয়ে একটা যাচ্ছেতাই জীবন কাটাচ্ছি।

দেশের প্রায় প্রতিটি জেলার মানুষের বসবাস এই দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায়। সকল রকমের ব্যবসা বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র এখানে। বড় বড় শিল্প কারখানা এই এলাকায়। সেই এলাকার মানুষের যেন ভোগান্তির শেষ নেই। একদিকে যেমন গ্যাসের সমস্যা তেমনি রয়েছে ভাঙা রাস্তাঘাট,পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা। তাই এই সমস্যা সমাধানের কতৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করেছেন ডিএনসিসিবাসী।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২২
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।