ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: সপরিবারে বাংলাদেশ-আমেরিকার সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির অংশ হতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রয়াত মার্কিন সিনেটের এডওয়ার্ড এম কেনেডির ছেলে এডওয়ার্ড এম কেনেডি জুনিয়র।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত "Commemorating the 50th Anniversary of US-Bangladesh Relations" শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, আমার বাবা বাংলাদেশের সঙ্গে সংঘটিত হওয়া জাতিগত বৈষম্য খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিলেন। আমেরিকান রাজনীতিবিদদের মধ্যে এডওয়ার্ড এম কেনেডিই প্রথম বাংলাদেশে পাকিস্তান আর্মির দমন, পীড়ন, অত্যাচার ও গণহত্যার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন। বাংলাদেশের প্রকৃত রাজনৈতিক অবস্থা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেন। শুধু বাংলাদেশে নয় এডওয়ার্ড এম কেনেডি আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা, উত্তরল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে শরণার্থী ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাবার স্মৃতিচারণ করে কেনেডি জুনিয়র বলেন, আমার বাবা বলেছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি যে সম্মান আর মর্যাদা পেয়েছেন তা তার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত। এশিয়ার মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতি গঠনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অনন্য। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ আমেরিকা সম্পর্ক সব সময় সমুন্নত থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এডওয়ার্ড এম কেনেডি ছিলেন ‘লায়ন অফ দ্যা সিনেট’ এবং গণতন্ত্রের আইডল। এডওয়ার্ড এম কেনেডি বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের স্বীকৃতি অর্জনে ও সঠিক নেতৃত্ব সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এই অবদানের জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ঢাবি উপাচার্য।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এডওয়ার্ড এম কেনেডির স্ত্রী ড. ক্যাথেরিন কিকি, ভাতিজি গ্রেস কেনেডি অ্যালেন ও ভাতিজা ম্যাক্স অ্যালেনসহ পরিবারের সদস্যরা। অনুষ্ঠানের আগে এডওয়ার্ড কেনেডি জুনিয়র তার পরিবারের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা ভবনের সম্মুখে তার বাবা এডওয়ার্ড এম কেনেডির লাগানো ঐতিহাসিক বটগাছ পরিদর্শন করেন।
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সম্মুখ সংগ্রাম ও প্রতিবাদের প্রতীক বটতলার ‘বটগাছ’ উপড়ে ফেলে পাকিস্তানি হানাদাররা। সেই স্থানেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার তিন মাস পর ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে এসে আরেকটি বটগাছ লাগান মার্কিন সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি।
বক্তব্য শেষে কেনেডি জুনিয়র ১৯৭১ সালে আমেরিকান কংগ্রেসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে তার বাবা এডওয়ার্ড এম কেনেডির দেওয়া বক্তব্য ও বিবৃতির রেকর্ড লাইব্রেরিতে সংগ্রহের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের হাতে তুলে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২২
এসকেবি/আরএ