নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ শহরের সরকারি মহিলা কলেজের সামনে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে গার্মেন্টস কর্মকর্তা মো. জয়নুর রহমান জনি (২০) নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িত দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত দুই ছিনতাইকারীদের মধ্যে সাগর ওরফে কুত্তা সাগর হলো ওই গ্রুপটির প্রধান বা মূলহোতা। এই ছিনতাইকারী চক্রের ৭-৮ জন সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে ২ জন নারী ছিনতাইকারীও রয়েছে। এই চক্রের সদস্যরা যে যেখানেই ছিনতাই করতেন সেখান থেকে সাগর ওরফে কুত্তা সাগরকে ভাগ দিতেন। তারা চাষাঢ়া মোড় ও এর আশপাশের এলাকাসহ ফতুল্লার বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই করতেন। ওই ছিনতাইকারী চক্রের বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া রাতে ছিনতাইরোধে শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশি চেকপোস্টের মাধ্যমে তল্লাশি চালানো হবে। নগরবাসীকে এজন্য সহযোগিতা করতে হবে। এর পাশাপাশি শহরে যেসব খাবারের দোকান গভীর রাত অবধি চালু থাকে সেগুলো রাত ১১টার পরে বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হবে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- শরীয়তপুরের সখিপুর এলাকার বাসিন্দা সালাউদ্দিনের ছেলে ও বর্তমানে জামতলা ধোপাপট্টি রাজিবের বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিনতাইকারী চক্রের হোতা সাগর ওরফে কুত্তা সাগর (২৩) ও নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি কাঠের মার্কেট এলাকার মৃত মানু চানের ছেলে বর্তমানে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাউটাইল আরব আল মামুন মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া জয়চান ওরফে বিশাল (২৪)।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) দিনগত গভীর রাতে ফতুল্লা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাগর ও বিশালকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি টিম। এ সময় গ্রেফতারদের কাছ থেকে নিহত জনির কাছ থেকে ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন ও ধারালো সুইচ গিয়ার উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ২৯ অক্টোবর ভোর ৪টায় কুষ্টিয়ার জে.এস বাস যোগে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া মোড়ে নেমে পায়ে হেঁটে চাষাঢ়া রেল ক্রসিংয়ের দিকে যান ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীর ফেইম এ্যাপারেলস লিমিটেডের জুনিয়র কোয়ালিটি অফিসার জনি। এসময় তাকে ছিনতাইকারী সাগর হাতে থাকা সুইচ গিয়ার ছুরি কোমরে ঠেকিয়ে জিম্মি করেন। মোবাইল ও মানিব্যাগ না দেওয়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান পায়ের হাঁটুর ওপরে একটু পেছনের দিকে আঘাত করেন। এ সময় জনির হাতে কম দামি মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনতাই করে পালিয়ে যান সাগর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ভোরে জয়নুর রহমান জনি মারা যায়।
এ ব্যাপারে কমলাপুর রেলওয়ে থানায় নিহতের চাচাতো ভাই মোশারফ মাহমুদ মনা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। পরে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে সাগর ও বিশালকে গ্রেফতার করে। তাদেরকে রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এসপি আরও জানান, জয়নুর রহমান জনিকে একাই ছুরিকাঘাত করে সাগর ওরফে কুত্তা সাগর। তাকে পাহারা দিয়ে ছিল জয়চান ওরফে বিশাল।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২২
এমআরপি/এএটি