নড়াইল: ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের রেশ ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নড়াইলের কালিয়ায় দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) দুপুর ও বিকেলে উপজেলার পাঁচগ্রাম ইউপির মহিষখোলা ও মহিষখোলা গ্রামে এ সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
আহতদের অধিকাংশ নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়া গুরুতর আহত হওয়া দু’জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজে (খুমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) মহিষখোলা গ্রামের ইউপি সদস্য সাখায়েত মণ্ডলের ভাই কামরুল মণ্ডলের নৌকা নিয়ে যান যাদবপুর গ্রামের মারুফ শেখের সমর্থক তিতাস শেখ। পরদিন শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকালে সাখায়েতের লোকজন ওই নৌকা ফেরত নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মারফ তার লোকজন ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ সাফায়েতের বাড়িতে হামলা করে। এ সময় আসাদ মণ্ডল, হিমায়েত মণ্ডল, লিয়াকত মণ্ডল, জিয়া মণ্ডল, শ্যাম শেখ, শফি মণ্ডল ও বাবু শেখের মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, টিভি, ফ্রিজ, আসবাপত্রসহ আটটি বাড়ি ভাঙচুর করে।
পরে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।
এতে সাফায়েতের পক্ষের মহিষখোলা গ্রামের হানিয়ারা বেগম (৪৫), নাজমীন বেগম (৩০), এলিনা বেগম (৩০), সুফিয়া বেগম (২৮) পরশিয়া বেগম (৫০), সাফায়েত মণ্ডল (৪৫), জিয়ার মণ্ডল, মুক্তি মণ্ডল, মেহদী মণ্ডল, আকাশ মণ্ডল, কামরুল মণ্ডল, গফফার মণ্ডল, সফি শেখ, নুরু মণ্ডল এবং মহিষখোলা গ্রামের মারুফ শেখ পক্ষের লিপন মিনা (২৪), সিদ্দিক মিনা (৬৫), শফিকুল ইসলাম (৫০), তকিবর শেখ, আমিনুর শেখ, তরিকুল শেখ রফিকুল শেখ, সবুজ শেখ, মিলন শেখ, তিতাস শেখসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত কয়েকজনকে খুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নড়াইল সদর হাসপাতালে আহত উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত লোক নির্বাচনে জেতার পরে মিছিল থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত বললেও অন্যরা অস্বীকার করছেন।
পাঁচগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, জোর করে নৌকা নেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মারুফ শেখ তার লোকজন নিয়ে মেম্বর সাফায়েত মণ্ডলসহ তার ভাইদের বাড়িঘর ভাঙচুরে করেছেন। সাফায়েতের হাতের আঙুল কেটে ফেলে দিয়েছে। চিকিৎসার জন্য তাকে খুমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
সাফায়েতের স্ত্রী নাজমীন বেগম বাংলানিউজকে বলেন, মারুফ শেখ শুক্রবার বিকেলে ২০০-৩০০ লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। ঘরের মালামাল, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে গেছে। নারীদের মারধর করাসহ টিভি, ফ্রিজ, আসবাপত্র ভাঙচুর করেছে।
নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. পার্থ সারথী রায় বাংলানিউজকে বলেন, সদর হাসপাতালে ১৫ জন ভর্তি হয়েছিলেন যার মধ্যে দু’জনকে রেফার্ড করা হয়েছে। অন্যদের চিকিৎসা চলছে। গুরুতর কিনা এখনই বলা যাচ্ছে না।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমিম আলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। জড়িত থাকার সন্দেহে উভয়পক্ষের আটজনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২২
এসআরএস