নড়াইল: যৌতুকের লোভে স্ত্রীকে গলা কেটে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় স্বামী রনি শেখ (২৪) ও তার বন্ধু প্রধান সহযোগী আব্বাস ফকিরকে (২২) কে গ্রেফতার করেছে নড়াইল সদর থানা পুলিশ।
শনিবার (৫ নভেম্বর) ভোর রাতে কালিয়ার চাচুড়ি গ্রামের বোনের বাড়ি থেকে রনিকে এবং তার সহযোগী আব্বাস ফকিরকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে শুক্রবার ঘটনার পরই রনির বাবা মো. লিটু শেখ (৫৫) ও তার দুই ভাই ইমরান শেখ (২৮) ও রুবেল শেখকে (২৬) গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে নড়াইল সদরের সড়াতলা গ্রামের নিজ বাড়িতে গৃহবধূ আছিয়া বেগমকে (২২) প্রথমে গলা কেটে ও পরে পুড়িয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় স্বামী ও সহযোগী। আব্বাস ফকির ওই গ্রামের জমির ফকিরের ছেলে।
গ্রেফতার রনি ও আব্বাস পেশায় দুজনই একটি বেসরকারি মোবাইল সিম কোম্পানির বিপণন কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জানা যায়, সাড়ে তিন বছর আগে নড়াইল সদর উপজেলার সড়াতলা গ্রামের রনি শেখ একই গ্রামের আছিয়া বেগমকে প্রেম করে বিয়ে করেন। তাদের বায়েজিদ নামে দুই বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে।
বিয়ের সময় লোভী রনি আছিয়ার বাবার কাছ থেকে নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা ও একটি জমি লিখে নেন যৌতুক হিসেবে। পরিবারের আরও জমি লিখে দেওয়ার জন্য আছিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করছিলেন রনি। গত সপ্তাহেও আছিয়ার মা রনিকে নগদ ত্রিশ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হন।
পারিবারিক কোন্দলের জেরে শুক্রবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে রনি নিজ বাড়িতে তার বন্ধু ও সহকর্মী আব্বাস ফকিরের সাহায্যে আছিয়াকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় আঘাত করলে গলা অর্ধেক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে ঘটনা ভিন্নখাতে চালাতে আছিয়ার শরীরসহ বিছানায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় রনির বাবা ও দুই ভাই ঘটনাস্থলে এসে আগুনে মারা গেছে এটা প্রমাণের চেষ্টা করতে থাকে। স্থানীয়রা ধোঁয়া দেখতে পেয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ও আছিয়া বেগমের মরদেহ দেখতে পায়। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ আছিয়ার অর্ধ পোড়া মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় আছিয়ার মা বাদী হয়ে সদর থানায় আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাদিরা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, পূর্বপরিকল্পিত এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের পেছনে থাকা আছিয়ার স্বামীসহ মামলার পাঁচ আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২২
আরএ