ঢাকা, বুধবার, ১৪ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলাদেশের উন্নয়নে অভিভূত চিলির রাষ্ট্রপতি

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২২
বাংলাদেশের উন্নয়নে অভিভূত চিলির রাষ্ট্রপতি

ঢাকা: ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা সান্টিয়াগোতে অবস্থিত প্যালেসিও ডি লা মোনেদাতে চিলির রাষ্ট্রপতি গ্যাব্রিয়েল বরিচ ফন্টের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন। রাষ্ট্রপতি বরিচ রাষ্ট্রদূত হিসেবে সাদিয়া ফয়জুননেসার পরিচয়পত্র সাদরে গ্রহণ করেন এবং চিলিতে বাংলাদেশের অনাবাসিক সমবর্তী রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনের পরিপ্রেক্ষিতে উষ্ণ অভিনন্দন জানান।

রোববার (৬ নভেম্বর) ব্রাজিলের বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানায়।

পরিচয়পত্র পেশের পর অনুষ্ঠিত বৈঠকে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সুদীর্ঘ ইতিহাস, গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধ ও ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব ও অবদান সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। ল্যাটিন আমেরিকার কিংবদন্তী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো কর্তৃক বঙ্গবন্ধুকে হিমালয়সম তুলনা জেনে রাষ্ট্রপতি বরিচ আবেগাপ্লুত হন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অবগত হয়ে রাষ্ট্রপতি অত্যন্ত শোকাহত ও ব্যতীত হন।

বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে অর্জিত বিভিন্ন মাইল ফলকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব সম্পর্কে জেনে রাষ্ট্রপতি গ্যাব্রিয়েল বরিচ অভিভূত হন।  

উল্লেখ্য, নব্বই দশকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ ও চিলিতে প্রায় একই সময়ে রাজনৈতিক সংগ্রাম চলছিল। সে কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি বরিচ বাংলাদেশ ও চিলি পরস্পর দ্বি-পাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগী হিসেবেও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন। স্বল্প সময়ে আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যে রাষ্ট্রপতি বরিচ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং উন্নয়নশীল বিশ্বে বাংলাদেশকে পথিকৃৎ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

চিলির রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং আর্থসামাজিক অগ্রগতি সম্পর্কে আরও জানার গভীর আগ্রহ ব্যক্ত করেন। এ পর্যায়ে রাষ্ট্রদূত তাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা সাদরে গ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ সফরের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রপতি দ্বি-পাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বৃদ্ধি করতে ভবিষ্যতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বৈঠকে চিলির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টোনিয়া উরেজোলা নগুয়েরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা চিলির ফরেন পলিসি জেনারেল সেক্রেটারিয়েট, এশিয়া প্যাসিফিক ডিভিশন, কৃষি মন্ত্রণালয়, ঔষধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা, মানবাধিকার কমিশন, পরিবেশ বিষয়ক কমিশন, সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ডিভিশন, কো-অপারেশান অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির প্রতিনিধিদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করেন। এ সময় তাদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সহযোগিতা, বাণিজ্য বৃদ্ধি, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, জাতিসংঘের বহুপাক্ষিক ফোরামে সপ্রতিভ অংশগ্রহণসহ পরিবেশ কূটনীতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। জেনেভাতে হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলে ২০২৩-২০২৬ মেয়াদে নবনির্বাচিত বাংলাদেশ ও চিলি একত্রে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।  

বাংলাদেশ ২০২০-২১ সালে চিলিতে ৮.৭ কোটি এবং ২০২১-২২ সালে ১৯.২ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, যার মধ্যে ওষুধ, গার্মেন্টস ও নীটওয়্যার, প্লাস্টিক সামগ্রী ও চামড়াজাত পণ্য উল্লেখযোগ্য। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ চিলি থেকে স্ক্র্যাপ আয়রন ও ফিশ ওয়েল আমদানি করে।

উল্লেখ্য, দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট বাংলাদেশের পক্ষে অগ্রগামী। রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে চিলির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত বাণিজ্য আলোচনা শুরু করার বিষয়ে সহমত ব্যক্ত করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২-২২
টিআর/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।