ঢাকা: সরকারিভাবে যাকাত সংগ্রহ ও বিতরণের বিধান রেখে ‘যাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা বিল, ২০২২’ জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে সামরিক সরকারের আমলে করা আইন ‘যাকাত ফান্ড অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২’ বিলুপ্ত করে নতুন আইন করতে এই বিল আনা হয়েছে।
রোববার (৬ নভেম্বর) বিলটি উপস্থাপন করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। এর পর তা পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
এ বিলে ধর্ম মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে যাকাত বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছে। এর সদস্য হবেন ধর্ম সচিব (ভাইস চেয়ারম্যান), ধর্ম, অর্থ ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন করে যুগ্ম সচিব পদ মর্যদার তিন কর্মকর্তা, সরকার মনোনীত পাঁচ জন আলেম, সরকার মনোনীত ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের দুইজন প্রতিনিধি এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (সদস্য সচিব)। বছরে এই বোর্ডের কমপক্ষে দুইটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সরকার এ বোর্ডের পরিচালনা ব্যয় বহন করবে।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, যাকাত সংগ্রহ, বিতরণ, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরির ক্ষমতা বোর্ডের থাকবে। কমিটি গঠন সম্পর্কে বিলে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে যাকাত সংগ্রহ ও বিতরণে কেন্দ্রীয়, সিটি কপোরেশন, বিভাগ, জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কমিটি গঠন করতে পারবে।
যাকাত তহবিল গঠন সম্পর্কে বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে সংগৃহীত যাকাত; প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিম নাগরিক, কোনো বিদেশি মুসলিম ব্যক্তি বা কোনো সংস্থায় জমাকৃত যাকাতের অর্থ থেকে পাওয়া যাকাত এবং শরিয়াহ সম্মত অন্য কোন উৎস্য থেকে পাওয়া যাকাত। শরিয়াহ সম্মত খাত ব্যতীত অন্য কোন খাতে যাকাতের অর্থ ব্যয় বা বিতরণ করা যাবে না।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কিত বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সঙ্গতিসম্পন্ন মুসলিমের ওপর আল্লাহ যাকাত ফরজ করেছেন। যাকাত দারিদ্র বিমোচন ও পুনর্বাসনের হাতিয়ার। যাকাত কোন স্বেচ্ছামূলক দান নয়, বরং যাকাত ধনীর সম্পদ থেকে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদের জন্য আল্লাহ নির্ধারিত বাধ্যতামূলকভাবে দেওয়া নির্দিষ্ট অংশ। দেশে ব্যক্তিগগত পর্যায়ে যাকাত ব্যবস্থা চালু থাকলেও নানা কারণে তার কাঙ্খিত সুফল পাওয়া যাচ্ছিল না। যাকাতের মাধ্যমে এক সময় সারা মুসলিম জাহানে দারিদ্র দূরীকরণ সম্ভব হয়েছিল। এই আইন পাস হলে দেশ থেকে দারিদ্র দূরীকরনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
এদিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে সামরিক সরকারের আমলে করা আইন ‘চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৬’ বিলুপ্ত করে নতুন আইন করতে ‘চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ বিল, ২০২২’ সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে। এ বিলটিও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান উত্থাপন করেন। পরে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলের কারণ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরে অবস্থিত নান্দনিক স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন এই মসজিদ। এই আইন পাস হলে অত্র অঞ্চলে ইসলাম প্রচার ও প্রসারে মসজিদটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২২
এসকে