ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নিউইয়র্ক

উদয়নের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ রোকসানা কামারের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৪
উদয়নের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ রোকসানা কামারের

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশির পরিচালিত উদয়ন ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন রোকসানা কামার।   সৎ বাবার বর্বরতায় দুই হাত হারানো শিশু শান্তর মা এই রোকসানা।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার শিশু ছেলের দুটি প্রস্থেটিক হাত লাগিয়ে দেশে ফিরেছেন তিনি।

রোকসানা জানালেন, এই কাজে তিনি নানা মানুষের ও সংগঠনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন। কিন্তু তাকে সহযোগিতার নামে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন উদয়নের কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তি তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। রোকসানা কামারের অভিযোগ এই সংগঠনটির পক্ষ থেকে শান্তর চিকিৎসায় সহযোগিতার নামে ৭ হাজার ২৯৭ ডলার তহবিল সংগ্রহ করে এর কর্তা ব্যক্তিদের কয়েকজন তার সবটাই লোপাট করেছেন। শান্তকে এই তহবিল থেকে মাত্র ৩৩০ ডলার দিয়ে বাকিটা উদয়নের কর্তাব্যক্তিদের বিমান ভাড়াসহ অন্যন্য খাতে খরচ দেখানো হয়েছে, জানান রোকসানা।
 
প্রধানমন্ত্রী দফতরে কর্মরত এই নারী বাংলানিউজকে বলেন, দেশের বাইরে গিয়ে যারা এধরনের প্রতারণা করে অর্থ সংগ্রহ করছে তারা বিদেশের মাটিতে দেশের মান ক্ষুণ্ন করা ছাড়া আর কিছুই করছে না।
 
উদয়নের প্রতারণা শুরু হয় শান্তকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর কথা ওঠার পর থেকেই। সংগঠনটি শান্তর চিকিৎসায় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা দিচ্ছে বলে তাদের ওয়েবসাইটে ও ফেসবুক পেজে পোস্ট দেয়। অথচ তখনও তারা একটি টাকাও দেয়নি।

তবে উদয়ন ফাউন্ডেশন দাবি করেছে, তারা রাহাত টনি নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে শান্তর জন্য ওই অর্থ পাঠিয়েছিলেন। আর রোকসানা কামার বলেছেন, তিনি এমন কোনো অর্থই পাননি।

পরে জানা যায়, রাহাত টনি নিজেই সে টাকা খরচ করেছেন।  

রোকসানা কামার বলেন, আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য কারো কাছে হাত পাতবো না বলেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম। সে কারনে কারো কাছে আমি সহায়তা চাইনি, কেউ আমাকে দেয়ও নি। কিন্তু হঠাৎই উদয়নের পক্ষ থেকে এরকম একটি ফেসবুক পোস্ট আমাকে বিষ্মিত করে। দ্রুত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা তাদের ভুল স্বীকার করে। কিন্তু পোস্টটি আর সরিয়ে নেয়নি।

রোকসানা বাংলানিউজকে বলেন, তিনি ওই সংগঠনটির কাছ থেকে একটি চিঠি নিয়েছিলেন যাতে তার ছেলেকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার ভিসা পাওয়া সহজ হয় । কিন্তু সেখানেও উদয়নের কর্তাব্যক্তিরা প্রতারণামূলক কিছু উদ্যোগ নেয়। রোকসানার সফরসঙ্গী করে একজনকে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে যাওয়ারও পায়তারা করে।
 
রোকসানা কামার বাংলানিউজকে বলেন, প্রবাসে বাংলাদেশিদের এমন আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। তবে তিনি এও স্বীকার করেন সেখানে কতিপয় মানুষের সহযোগিতা পেয়েই তিনি ছেলের দুটি প্রস্থেটিক হাত লাগিয়ে আনতে পেরেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার শ্রাইনার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। রোকসানা বলেন, আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা করার কারণেই আমার ছেলে নিজে খাবার তুলে মুখে দিতে পারছে। কিছু কিছু কাজ করতে পারছে।

রোকসানা কামার জানালেন, বছরে একবার করে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে হবে হাতটিকে ঠিক করিয়ে আনতে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, চিকিৎসকদের মতে শান্ত যত বড় হয়ে উঠবে ততই হাতটি তার শরীরের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা হারাবে।

চিকিৎসকরা প্রতি ছয়মাস পরপর কাজটি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন কিন্তু এত খরচ বহন করা সম্ভব নয় বলে নিজে বলে কয়ে প্রতি বছরে একবার যাবেন এমন নির্দেশনা নিয়ে এসেছেন, জানালেন রোকসানা কামার।

বাংলাদেশ সময় ১২৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ