ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নিউইয়র্ক

সহিংস চরমপন্থা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন শত্রু

শিহাবউদ্দীন কিসলু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৪
সহিংস চরমপন্থা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন শত্রু ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নিউইয়র্ক: ‘সহিংস চরমপন্থা’ বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন শত্রু। এই কদর্য (ন্যাস্টি) বিষয়গুলো উভয় দেশের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই অভিন্ন শত্রুর মোকাবেলায় দু’দেশের সম্পর্ক দৃঢ় ভিত্তি পেয়েছে।

ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা নিউইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে পৃথক পৃথক মতবিনিময় সভায় একথা বলেন।

‘বহু ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব ব্যাপক, শক্তিশালী এবং গভীর’ বলেও মন্তব্য করেন ড্যান মজিনা।

তিনি আরো বলেন, জিএসপি সুবিধা বাতিল করার বিষয়টিকে অনেকে নেতিবাচক মনে করলেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার সূচনা করেছে এই পদক্ষেপে।

মজীনা বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অনেক গার্মেন্ট মালিকরা সহায়তা না করলেও এই শিল্পের উন্নয়নে খোদ বাংলাদেশ সরকার নেতৃত্ব দিচ্ছে।
রোববার নিউইয়র্ক সিটি ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আয়োজিত সম্বর্ধনা সভা এবং আমেরিকা-বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটি ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর জাস্টিসের মধ্যাহৃভোজ ও আলোচনাসভায়  রাষ্ট্রদূত বক্তব্য রাখছিলেন।



রোববার সকালে উডসাইডের গুলশান টেরেসে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাথে প্রাতঃরাশ বৈঠক, দুপুরে আমেরিকা বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটি ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর জাস্টিস-এর আয়োজনে একই স্থানে মধ্যাহৃভোজ ও সভা,  এরপর পায়ে হেঁটে বাঙালি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ঘুরে দেখা, বিকেলে শিগগিরই সম্প্রচারিতব্য টাইম টেলিভিশন স্টুডিওতে বিশেষ মতবিনিময় এবং সন্ধ্যায়  ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স-এর আয়োজনে নৈশভোজ ও মত বিনিময়সভায় বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা।

বাংলানিউজের সাথে কিছু সময় দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় তিনি বলেন, চাকুরি থেকে অবসরের পর তিনি বাংলাদেশ ঘুরে বেড়িয়ে দেখবেন। বরিশালে যাবেন। ‘বাংলাদেশ সত্যিই ভীষণ সুন্দর’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মিনি বাংলাদেশ’ বলে পরিচিত জ্যাকসন হাইটসে এসে মনে হয়েছে তিনি তার নিজের মানুষের কাছে এসেছেন।

সন্ধ্যায় ওয়ার্ল্ড ফেয়ার মেরিনাতে ডেমোক্রেসি অ্যালায়েন্স আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ড্যান মজীনা বলেন  ‘আমেরিকার জন্য বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ইজ দ্য মডারেট, টলারেন্ট সেক্যুলার অলটারনেটিভ অব ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম’।

তিনি বলেন বিশ্বের শীর্ষ গামেন্টস রপ্তানিকারক দেশ হবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পণ্য হবে ‘গ্লোবাল ব্রান্ড’।

মজীনা আরো বলেন, নিজেই বিকিশিত হবে বাংলাদেশের গামেন্ট শিল্প। এবং বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের গার্মেন্ট  ‘শীর্ষ ব্রান্ড’ হবে বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস।
মজীনা বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে এশিয়ান টাইগার, রয়েল বেঙ্গল টাইগার হবে ‘বাংলাদেশ’।

চট্টগাম বন্দরে এখন আর আগের মত সমস্যা নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী বলে মনে করেন মজীনা।

প্রবাসীদের সাথে ড্যান মজীনার ম্যারাথন মতবিনিময় সভা নিয়ে বিরোধী দুই রাজনৈতিক শিবিরে কৌতূহলের শেষ নেই। তবে সব মিলিয়ে সরকারবিরোধীরা মতবিনিময় সভাগুলোতে দেওয়া ড্যান মজীনার বক্তব্যে অনেকটাই হতাশ হয়েছেন বলেই জানা গেছ্।

টানা দুদিন নিউইয়র্কে ম্যারাথন মিটিং করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা। মার্কিন দূতাবাসের ‘পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি’ আওতায় ড্যান মজিনার এ কর্মসূচি সরকারী কর্মসূচি। একথা জানিয়েছে খোদ মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। তবে ড্যান মজিনার এ-মিশন দেশে ও প্রবাসে বাংলাদেশিদের মধ্যে নানা জল্পনারও জন্ম দিয়েছে।

এর আগে রোববার সকালে উডসাইডের গুলশান টেরেসে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাথে প্রাতঃরাশ বৈঠকে ড্যান মজীনা, বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ধর্মীয় ভিন্নমতাবলম্বিতার কারণে নয়, স্বার্থান্বেষী মহলের অর্থ ও ক্ষমতার স্বার্থে ঘটানো হয়ে থাকে।

এ-সভায়  হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য তার মূল প্রবন্ধে সংখ্যালঘু হিন্দু ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের ওপর বিএনপি ও জামায়াতের হামলার কথা উল্লেখ করেন। তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি ও সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ করতে বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়ার দল ও অনুসারীদের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন,  জামায়াত-শিবির চক্রের ঔদ্ধত্যে বাংলাদেশ এখন সংখ্যালঘু ও প্রগতিশীল মানুষের মৃত্যুউপত্যকায় পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৪

** দু’দেশের সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাবো

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ