ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

রোগেরও ইন্টারব্রিড!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৭
রোগেরও ইন্টারব্রিড! রোগেরও ইন্টারব্রিড! (ছবি: সংগৃহীত)

আমাদের আধুনিক প্রজাতির মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্সদের সঙ্গে নিয়ান্ডারথালদের যৌন মিলনে বিভিন্ন রোগের অন্তঃপ্রবাহ ঘটে। কেন আমাদের এই সহোদর সমসাময়িক মানব প্রজাতিটি বিলুপ্ত হয়েছিল- স্থায়ী এ রহস্যের উদ্‌ঘাটনে রোগের এ ইন্টারব্রিড সূত্র হতে পারে।  

ইউরেশিয়ায় অভিবাসিত হওয়ার পর আমাদের সঙ্গে মিলন-মিশ্রণ, শঙ্করায়ন ও বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় হারপিস ভাইরাসে সৃষ্ট ভাইরাল গ্রুপভুক্ত এসব রোগে সংক্রমিত হয় নিয়ান্ডারথালরা। এ মিলনের ফলে সৃষ্ট ইনব্রিড প্রজাতির মাধ্যমে বা সরাসরি আমরাও এখনও বহন করে চলেছি পেটে আলসার, যক্ষ্মা, ফিতাক্রিমি ছাড়াও প্যাথোজেন ও যৌনবাহিত সংক্রমণজনিত (STI) এসব রোগ।

     

যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শার্লট হাউল্ডক্রফট বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান তথ্য প্রমাণ করছে, কয়েক হাজার বছর ধরে এসব ইন্টারব্রিডেড রোগ নিয়ান্ডারথালদের বিলুপ্ত হতে সহায়তা করেছে’।

‘আমাদের অনুমান, নিয়ান্ডারথালদের প্রতিটি দলের নিজস্ব ব্যক্তিগত দুর্যোগ ছিল। যেমন- কিছু নিয়ান্ডারথাল জিব্রাল্টারে বাস করতেন। তারা এসব রোগাক্রান্ত হয়ে হারিয়ে যান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরো দলের বিলুপ্তির অনেক কারণের একটি এসব রোগ’।
ছবি: সংগৃহীতঅন্য একটি নতুন গবেষণা বলছে, নিয়ান্ডারথালদের জিনোমে আধুনিক মানুষের রোগের নানা নিদর্শন রয়েছে। তবে ‌সেসব জিনে প্যাথোজেন প্রতিরোধী লক্ষণগুলো নিয়ান্ডারথাল থেকে বিবর্তিত হয়ে পেয়েছি আমরা। অর্থাৎ, নিয়ান্ডারথালদের খারাপ অবস্থানের পাশাপাশি রোগগুলোর প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন আধুনিক মানুষের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে বেঁচে থাকার সাফল্যের কারণ হয়ে দাড়ায়।

এভাবেই ৪০ হাজার বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষরা নিয়ান্ডারথালসহ অন্য প্রজাতিগুলোর মাধ্যমে পুনর্গঠিত হতে সমর্থ হয়।

এ সর্বশেষ বিশ্লেষণ দেখায় যে, অনেক রোগ প্রতিরোধের জন্য নিয়ান্ডারথালদের গুরুত্বপূর্ণ জিনে অত্যন্ত কম জেনেটিক বৈচিত্র্য ছিল। নিয়ান্ডারথালদের এ জিনগুলোর প্রতিটি প্রায় কাছাকাছি ও একই রূপের ছিল।

অন্যদিকে, আধুনিক মানুষের জিনে অনেক বেশি বৈচিত্র্য ছিল। এর অর্থ এই যে, যখন বিদেশি রোগের মুখোমুখি হয় নিয়ান্ডারথালরা, তখন তাদের দুর্বল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল।
ছবি: সংগৃহীতমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির জর্জ পেরি এই সর্বশেষ গবেষণার সহ গবেষক। তিনি বলেন, ‘এর আগের পর্যায়ে বেশ কিছু সময়ের জন্য দুই প্রজাতি যখন আলাদাভাবে বিবর্তিত হচ্ছিল,  তখন তাদের রোগও পাশাপাশি আলাদাভাবে বিবর্তিত হচ্ছিল। অন্য কথায়, সেখানে রোগের একটি দ্বিপথ বিনিময় হয়েছে’।

‘সুতরাং, যখন দুই প্রজাতি একসঙ্গে হয়ে রোগ বিনিময় করে তখন সেখানে এক বা উভয় জনগোষ্ঠীর ওপর প্রভাব বিস্তার করারই কথা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত নিয়ান্ডারথালদের রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা ছিল না, যেখানে তা মোকাবেলার জন্য একটি ভালো জেনেটিক টুলকিট ছিল স্যাপিয়েন্সদের। ফলে নিয়ান্ডারথালরা নতুন সংক্রমণের মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়নি’।

‘এ বিশ্লেষণ আমাদের রোগের সংক্রমণ জনিত বিবর্তন সম্পর্কে জানতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে’।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।