ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

বরফে হাঁটাহাটি, আসল মাস্টারমশাই পেঙ্গুইন!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৭
বরফে হাঁটাহাটি, আসল মাস্টারমশাই পেঙ্গুইন! বরফে হাঁটাহাটি, আসল মাস্টারমশাই পেঙ্গুইন!

প্রকৃতিই মানুষের আদি শিক্ষক। পশুপাখিদের কাছ থেকে আদিকাল থেকে কতোকিছু শিখছে মানুষ। সেই শেখায় এখনো বিরাম নেই কোনো। প্রকৃতির নানা বিরূপতাকে জয় করে টিকে থাকতে, বেঁচে থাকতে হয় প্রাণীদের। যেসব প্রাণী তা করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা টেকেনি; বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।

প্রাণীদের দেখে অনেককিছু উদ্ভাবনও করছে মানুষ। যেমন পেরিগ্রিন বা ফ্যালকনের ওড়ার ভঙ্গি থেকে নতুন ধরনের ফাইটার প্লেনের নকশা তৈরি করেছেন বিমান-প্রকৌশলীরা।

আর ফড়িং দেখে হেলিকপ্টার। এরকম কতো কি!

এবার বরফে কী করে হাঁটাচলা করতে হবে, কিভাবে হাঁটলে পা হড়কে পড়ে হাত-পা-কোমর ভাঙবে না, সেটাও মানুষকে শিখতে বলা হচ্ছে পেঙ্গুইন পাখিদের কাছ থেকে। জার্মানদের প্রতি এহেন ফর্মুলা বাতলেছেন সেদেশের বিজ্ঞানীরা। দুটো পত্রিকার শিরোনাম তুলে ধরছি:
১. Germans Advised To Walk Like Penguins On Ice
২. ‘Big FREEZE: Boffins urge us to stay safe walking on ice by 'waddling like penguins'

শুধু পেঙ্গুইনের মতো হাঁটলেই হবে না। পেঙ্গুইনের মতো হাঁটায় পারদর্শিতাও অর্জন করতে হবে—‘‘...should master the “penguin walk” । বিশেষ করে শীতকালে। যখন গোটা পশ্চিমা দুনিয়া ঢেকে যায় অসীম তুষারে।
 
German Society of Orthopaedics and Trauma Surgery এ মর্মে জনগণকে পরামর্শ দিয়ে বলেছে, বরফের ওপর হাঁটার সময় খেয়াল রাখতে হবে শরীরটা যাতে সামনের দিকে ঝুঁকে থাকে, আর শরীরের ভরকেন্দ্রটা সামনের পায়ের ওপর থাকে। পেঙ্গুইনরা এভাবেই হেঁটে বেড়ায় বরফের ওপরে। তাই ওরা কখনো পড়ে যায় না বা পিছলে যায় না। শুধু পেঙ্গুইন কেন, হাঁসের মতো অন্যান্য জলচর প্রাণীরাও এভাবেই হাঁটে।

সেখানে আরো বলা হয়েছে, মানুষ যখন হাঁটে তখন সে শরীরের ওজন তার দু’পায়ের ওপর সমানভাবে ফেলে। বরফের ওপর হাঁটার সময় সেটাই ডেকে আনে বিপদ। অথচ বরফে হাঁটার সময় শরীরটা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে নিলে পুরো শরীরের ভরটা সামনের পায়ের পাতার ওপর পড়ে। তাতে পিছলে বা পা হড়কে পড়ে হাত-পা ভাঙার ভয় থাকে না। ছুটতেও হয় না অর্থোপেডিক হাসপাতালে। জার্মান চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এখন লোকজনকে ব্যাপারটা রীতিমতো বোর্ডে এঁকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন।

জার্মানিতে এবারের শীতে তুষারপতন-পরবর্তী বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। দুর্ঘটনার শিকার পঙ্গু-আহত লোকজনে ভরে যাচ্ছে হাসপাতালগুলো। ফলে টনক নড়েছে সবার। তাই বরফের ওপর হাঁটার কৌশল বাতলানোসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা গত বুধবার থেকেই বিভিন্ন পরামর্শ বিলিয়ে চলেছেন।
 
এর আগে ২০১৪ সালে এমনই অবস্থা হয়েছিল। সেবারও বরফে পা হড়কে পড়ে প্রচুর লোক আহত হয়েছিলেন। ঘটেছিল বহু গাড়ি দুর্ঘটনাও। এসব কারণে জার্মানির বার্লিনের নগর কর্তৃপক্ষ পড়েছিল তীব্র সমালোচনার মুখে। কারণ মোটর গাড়ি চালকদের পক্ষ থেকে উপুর্যপুরি অভিযোগ পেয়েও কর্তৃপক্ষ সেবার শহরের ফুটপাতগুলোতে ‘রক সল্ট’ ছেটায়নি।
এবারের অবস্থাটা একদমই ভিন্ন। এবার সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার সব ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেই মাঠে নেমেছে কর্তৃপক্ষ।  
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৭
জেএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।