ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

দুই বছরের মধ্যে ফিরে আসবে ম্যামথ!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৭
দুই বছরের মধ্যে ফিরে আসবে ম্যামথ! ফিরে আসবে ম্যামথ!

সাইবেরিয়ার বিলুপ্ত সুবৃহৎ লোমশ হাতি ম্যামথকে ফিরিয়ে আনতে প্রকল্পের কাজ চলছে অনেকদিন ধরে। সাম্প্রতিক সংবাদ অনুসারে, ‘তাদের পুনরুত্থান শেষ প্রান্তে রয়েছে এবং দুই বছরের মধ্যে ক্লোন হয়ে ফিরে আসবে’।

হার্ভার্ডের ‘লোমশ ম্যামথ পুনর্জাগরণ’ প্রকল্পের প্রধান প্রজনন বিজ্ঞানী জর্জ চার্চ বোস্টনের আমেরিকান অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সভায় এ সপ্তাহে জানিয়েছেন, তিনি বছর দুয়েকের মধ্যে ম্যামথের একটি ভ্রূণ পেতে আশাবাদী। তার মতে, এটি সম্পূর্ণরূপে সম্ভব।

লোমশ ম্যামথই প্রথম প্রজাতি নয়, যাকে পুনর্জাগরিত করা হবে। বিশ্বের প্রথম বিলুপ্ত প্রাণীর ক্লোন হিসেবে ২০০৩ সালে স্পেনের পরীক্ষাগারে জন্মগ্রহণ করে বুকার্ডো প্রজাতির একটি বন্য পার্বত্য ছাগল। প্রাণীটি মাত্র কয়েক মিনিট বেঁচে থাকলেও বিজ্ঞানীদের আরও বিলুপ্ত প্রাণীর সুস্থ ক্লোনিং পেতে গবেষণা চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে গেছে।

৪০ হাজার বছর আগে চিরতরে হারিয়ে যাওয়া ম্যামথের নিকটতম জীবন্ত আত্মীয় এশীয় হাতি। গত কয়েক বছর ধরে ক্লোনিং গবেষণার অগ্রদূত চার্চ ও তার দল সাবধানে এশীয় হাতিদের কোষে ম্যামথের সুবৃহৎ জিন স্থাপন করেছেন।
ফিরে আসবে ম্যামথ!
‘ম্যামথ সারাংশ’ এর গুণাবলী এই হাতির কোষে পুন:স্থাপিত হয়। ক্লোনিং পশুদের মাঝে সম্ভাব্য দীর্ঘ লোম, সুমো-কুস্তিগীর আকারের সুবৃহৎ শরীরের সুমিষ্ট চর্বি এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে চেহারা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

এ ধরনের উদ্দীপনা মৌলিক জীববিদ্যার নৈপুণ্যের ওপর নির্ভর করে।

প্রাণীদের জীবন শুরু হয়, যখন একটি একক কোষ দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়। তারপর ‘ভ্রূণ’ নামক কোষের একটি অতি ক্ষুদ্র বান্ডিল গঠনের বিভাজকের ওপর রাখে। পরবর্তী সময়ে ভ্রূণ বিভক্ত কোষগুলো এবং আরও বিশেষ হয়ে গঠিত বিভিন্ন টিস্যু ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সমন্বয়ে একটি সম্পূর্ণ জীবন পায় একটি প্রাণী।

তাই ক্লোনিং করতে প্রথমে একটি একক সুবৃহৎ সেল তৈরি করতে হবে। একটি সুবৃহৎ ভ্রূণের মধ্যে সেটিকে স্থাপন এবং সম্পূর্ণ বৃদ্ধি করতে হবে।

একটি লোমশ ম্যামথ করতে সেটি অনুপস্থিত। চার্চ তাই সুবৃহৎ হিমোগ্লোবিনের জন্য জিন সংযোজন করেছিলেন। হিমোগ্লোবিন লাল রক্ত কোষের অণু, যা শরীরের চারপাশে অক্সিজেন ফেরি করে। এমনকি কম তাপমাত্রায় কাজ করে। বরফ যুগে প্রসূত লোমশ ম্যামথের মতো একটি সুবৃহৎ পশুর সংস্করণ তৈরিতে এটি একটি অপরিহার্য কাজ।

এর দুই বছর পরে চার্চের দল হাতির জিনোমের ৪৫টি জিনের পরিবর্তন করেছেন। সেগুলো ‘ম্যামথ সংস্কারকৃত’ একটি হাতি পেতে তাদের লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছাতে সহায়তা করছে।  
ফিরে আসবে ম্যামথ!
এরপরও বিজ্ঞানীরা আরও দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন। ২০১৫ সালে একটি এশীয় হাতির ১ হাজার ৬৪২ জিনে চিহ্নিত পরিবর্তিত জীবনযাত্রার সঙ্গে লোমশ ম্যামথের জিনোমের তুলনামূলক গবেষণা চালাচ্ছেন। চার্চ যে ৪৫টি জিনের পরিবর্তন করেন, তা মোট জিনোমের একটি ছোট ভগ্নাংশের সমান।
কিন্তু চার্চ যুক্তি দেন যে, সুবৃহৎ কিছু করতে তার হাতির প্রতিটি কোষে পরিবর্তনের দরকার নেই।

চার্চ কখনও দাবি করেননি যে, তিনি একটি সরল বিশ্বাসে, অকৃত্রিম, শতভাগ খাঁটি লোমশ ম্যামথ করছেন। এটি হবে এমন একটি প্রাণী, যার ডিএনএ মূলত হাতির হবে, কিন্তু ব্যবহারিক ও নৈতিকভাবেই সুবৃহৎ ডিএনএ’র একটি পল্লবগ্রাহী এর সঙ্গে থাকবে।

তিনি একটি জীবন্ত, শ্বাস-প্রশ্বাস, পশমলেপা সুবৃহৎ বাছুর তৈরির কথাও বলেননি। তার কাজ, একমাত্র একক কোষকে গুরুত্ব দেওয়া।

তিনি একটি ‘ম্যামথ-হাতি শঙ্কর’ অথবা ‘ঠাণ্ডা অভিযোজিত হাতি’ তৈরির কথা বলেছেন, যাকে ‘ম্যামোফ্যান্ট’ বা ‘এলিমোথ’  বলা যেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।