ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

ফিরছে লোমশ নাকের ভোঁদড়

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
ফিরছে লোমশ নাকের ভোঁদড় কম্বোডিয়ায় এখন লোমশ নাকের ভোঁদড়ের একটি দুর্গ আছে। ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

বিরল প্রাণীর তালিকায় চলে গেছে সামুদ্রিক ও বন্য ভোঁদড়েরা। এর মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার লোমশ নাকের ভোঁদড় বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রজাতির একটি।

তবে অপূর্ব সুন্দর এ প্রজাতিটিকে রক্ষা ও সংরক্ষণে কম্বোডিয়ায় ব্যাপক কাজ করছে আন্তর্জাতিক সংরক্ষণ সংস্থা। তহবিল ও সংরক্ষণের উত্তম পন্থার ঘাটতি থাকলেও এ বিষয়ে যথেষ্ট সফল তারা।

১৯৯০ এর দশকে বাস্তুহ্রাস, শিকার এবং স্থানীয় মাংসের খাদ্যের উ‍ৎসে পরিণত হওয়ায় পৃথিবী জুড়ে লোমশ নাকের ভোঁদড় বিলুপ্ত হয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে ২০০৬ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে সম্ভাব্য আবাসস্থলে জরিপ চালিয়ে কম্বোডিয়ার চারটি এলাকায় কয়েকটি ছোট ভোঁদড় গোষ্ঠীর উপস্থিতি নিশ্চিত হয় আন্তর্জাতিক সংরক্ষণ সংস্থা। এর মধ্যে টোনাল স্যাপ লেকের আশেপাশে এদেরকে বেশি পাওয়া যায়।

‘প্রজাতিটি ‘পুনরুদ্ধার’ হয়েছে। এখন এটিকে সুরক্ষিত রাখতে হবে, যেন সংখ্যা বাড়তে পারে’- বলেছেন সংস্থাটির প্রধান গবেষক সকরিথ হেনগ।

অপূর্ব সুন্দর এ প্রজাতিটিকে রক্ষা ও সংরক্ষণে কম্বোডিয়ায় ব্যাপক কাজ করছে আন্তর্জাতিক সংরক্ষণ সংস্থা।  ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীততার ব্যাখ্যা- ‘প্রজাতিটির সুরক্ষায় অনেক আইন ও বিধিমালা রয়েছে, তবে সেগুলো প্রয়োগ করা হচ্ছে দুর্বল ও সীমিতভাবে। বন্যপ্রাণী ও বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্ব সম্পর্কে স্থানীয় মানুষদের সচেতনতা না থাকায় এদের বাস খুব সীমিত পর্যায়ে চলে গেছে’।

আন্তর্জাতিক সংস্থাটি টোনাল স্যাপ লেকে লোমশ নাকের ভোঁদড়ের আবাসস্থল পুনরুদ্ধার ও সমৃদ্ধ করা এবং স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোর দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও স্কুলগুলোতে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করছে। তারা সরকার ও কমিউনিটি রেঞ্জারদের সহযোগিতায় সংরক্ষণ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং স্থানীয় মৎস্যজীবী সম্প্রদায়কে বিকল্প জীবিকার উন্নয়নে সহায়তার মাধ্যমে ভোঁদড়গুলোকে রক্ষা করছে।

প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে আলাপচারিতা ও গবেষণা শেষে ‘ভোঁদড় রক্ষকদের’ গ্রুপ গঠন করেছে সংস্থা। গ্রুপটি সচেতনতা বিস্তারে সহায়তায় নেমে স্থানীয়দের কাছ থেকে শক্তিশালী সমর্থন লাভ করতে সমর্থ হয়েছে।

প্রজাতিগুলোকে আরও ভালোভাবে সুরক্ষিত রাখতে আইন ও বিধিগুলোর কঠোর প্রয়োগেরও সুপারিশ করেছে তারা।

সকরিথ হেনগ বলেন, ‘ভোঁদড়দের সফল সংরক্ষণে এ পদক্ষেপগুলো  গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, স্থানীয় জনগণকে শিক্ষা দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, তারা এ জ্ঞানকে অন্য সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। এখন এটিও নিশ্চিত করছে যে, স্থানীয় সম্প্রদায় স্থায়ীভাবে তাদের সম্পদের ব্যবহার ও পরিচালনা করতে সক্ষম এবং আর্থিকভাবে শক্তিশালী’।

‘উদাহরণস্বরূপ, কিছু প্রজাতি এখন জখমের হাত থেকে ভালো সুরক্ষায় রয়েছে। স্থানীয়রা অবৈধ ক্রিয়াকলাপ বন্ধ করে ভোঁদড় সংরক্ষণে টোনাল স্যাপ লেকে এলাকাটিকে আটকে রেখেছেন’।

বিরল এ ভোঁদড় সংরক্ষণে স্থানীয়রাও এখন সচেতন ও তৎপর।  ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীতকর্মকর্তা ও গবেষকরা কয়েকটি ফাঁদ ও আহরিত পশমগুলোর রেকর্ড থেকে জানতে পেরেছেন যে, এখন কম সংখ্যক লোমশ নাকের ভোঁদড় হত্যা করা হচ্ছে। চলন্ত আবাসস্থল পুনর্নির্মাণ, কম শিকার এবং বেশি সচেতনতাও প্রাণীটির উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিশ্চিতে সাহায্য করছে।

‘সংরক্ষণের এসব পদ্ধতি সফল হয়েছে। কম্বোডিয়ায় এখন কমপক্ষে লোমশ নাকের ভোঁদড়ের একটি দুর্গ আছে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ভালো ফলাফল এনে দিয়েছে পৃথিবী ও একটি প্রজাতির জন্য, যেটি একবার বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়েছিল’- যোগ করেন হেনগ।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
এএসআর
**
সংরক্ষণের সফলতায় রক্ষা পাচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় ভোঁদড়

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।