ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

দুই চাকায় দেশ জয়

মাহবুব এ রহমান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
দুই চাকায় দেশ জয় ...

পৌষের কনকনে ভোর৷ সীমান্তের কুয়াশা ভেদ করে নতুন দিনের হাতছানি। নতুন প্রত্যয়ে নব উদ্যমে ঘুম ভাঙে চার তরুণের।

চলে স্বপ্ন পূরণের প্রস্তুতি। ততক্ষণে কুয়াশার লুকোচুরি ছাপিয়ে হলুদ-লাল উজ্জ্বল দ্যুতি ছড়িয়ে প্রতিদিনের মতো পূব আকাশে উদিত হয় নতুন সূর্য।  

তবে এ দিনটি বিশেষ৷ ১৯৭১ এর এদিন পলাশীর প্রান্তরে অস্তমিত হওয়া বাংলার স্বাধীন সূর্যটা উদিত হয়েছিল নতুন করে৷ তাই এ দিনের সূর্য যেন আমাদের বিজয়ের আলোকছটা। আর সেই বিজয়ের স্মৃতি উদযাপনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থী রসায়ন বিভাগের মাহমুদ শরীফ, মো. যায়েদ এবং লোক প্রশাসন বিভাগের তোফায়েল আহমেদ ও থংপং ম্রো নেন অনন্য এক উদ্যোগ।

 ‘নৈতিক উন্নয়নই হোক টেকসই উন্নয়নের হাতিয়ার’ স্লোগানে দ্বিচক্রযান সাইকেলে চড়ে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া ভ্রমণ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিস্টস এর চার সদস্যের এ সাহসী যাত্রায় সঙ্গী চারটি সাইকেল।  

শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় তেতুলিয়ার বাংলাবান্দা জিরো পয়েন্ট থেকে যাত্রা শুরু৷ লক্ষ্য টেকনাফ। যাত্রা বেশ কঠিন হবে আগেই বুঝেছিলেন৷ কিন্তু শুরুর পর বুঝতে পারেন যতটুকু চিন্তা করেছিলেন তার চেয়েও কঠিন হবে এ যাত্রা। টিমের সদস্য মাহমুদ শরীফ বলেন, চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে গেলে আবার পথচলার প্রেরণা জোগাতো আমাদের তীব্র মানসিক শক্তি।  

ছোটবেলায় পাঠ্যবইয়ে পড়া সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা দেশটি যেন নতুন করে ধরা দেয় তাদের চোখে। প্যাডেলচালিত দুই চাকার যান কখনও নিয়ে গেছে সবুজ ধানক্ষেতের মধ্য দিয়ে, কখনও নিয়ে গেছে গ্রাম-বাংলার সৌন্দর্যের মধ্য দিয়ে, আবার কখনও কংক্রিটের শহরের ওপর দিয়ে। নানান পেশার মানুষের নানামুখী জীবনযাপন, বাংলার ঐতিহ্য-ইতিহাস ও স্থানীয় নামে বিখ্যাত নানান খাবারের অপূর্ব স্বাদ তাদের দুই চাকার গতিকে করে আরও আনন্দময়।  

৯ দিনের রোমাঞ্চকর যাত্রা শেষে ২৪ ডিসেম্বর লক্ষ্যে পৌঁছান তারা। দুপুর ২টায় টেকনাফের জিরো পয়েন্টে থামে ১ হাজার ১ কিলোমিটারের এ যাত্রা।  

থংপং ম্রো উচ্ছ্বাসের সুরে বলেন, ভার্চুয়াল জগত থেকে বের হয়ে সুন্দর, সবুজের সমারোহ এই সোনার বাংলার বাস্তব সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পেরেছি। বিভিন্ন জায়গায় আমরা আমাদের প্রতিপাদ্য বিষয়কে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কষ্ট হলেও বিজয়ের মাসে এ যাত্রা জীবনকে নতুন করে উপলব্ধি করিয়েছে।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিস্ট এর অন্যতম উদ্যোক্তা রাইসুল ইসলাম জানান, আমাদের চারজন সদস্য চমকপ্রদ ও সাহসী এক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে৷ আমরা শুরু থেকেই পরিবেশবান্ধব সাইকেলকে উৎসাহিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। সেটিও আমাদের এমন এক উদ্যোগ। ভবিষ্যতেও এমন ভালো কিছু ইভেন্ট আয়োজনের চিন্তা আছে আমাদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা,  ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।