ঢাকা: এ প্রজন্মের সংবাদ মাধ্যম অনলাইন নিউজ পোর্টালে কাজ করতে যেয়ে প্রতিদিনই নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করছি। প্রতিনিয়ত তাৎক্ষণিক সংবাদ পরিবেশন এবং এই সংবাদের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কারণেই নতুন কিছু শিখছি প্রতিদিনই।
অনলাইনের কারণেই এখন যেকোনো সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিক্রিয়াও আসছে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই। আগেরমতো একটি খবর প্রকাশের পর এখন আর এর প্রতিক্রিয়ার জন্য পরদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়না।
যেকোন গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ দ্রুত ও তাৎক্ষনিক প্রকাশের ফলে এখন তার প্রতিক্রিয়াও খুব দ্রুত আরেকটি সংবাদে পরিণত হয়।
এমন প্রমাণই পাওয়া গেলো গত ৫ জুন। ওইদিন স্পিকারের একটি বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের মন্তব্যকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আদালত আর রাজনৈতিক প্রাঙ্গণ। উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ ওইদিন স্পিকারের বক্তব্যকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহীতা’ হিসেবে আখ্যা দেয়। সংবাদটি বাংলানিউজ ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়নি। অনেক পরে আরেকটি মাধ্যমে খবরটি প্রকাশ হয়।
বাংলানিউজের আদালত প্রতিবেদক ইলিয়াস সরকারের পাঠানো খবরটি তাৎক্ষণিকভাবে সারাদেশে আলোচনার ঝড় তোলে। এর রেশ চলে জাতীয় সংসদেও। ওইদিন মহাজোট সরকারের সিনিয়র সংসদ সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ঝড় তোলেন সংসদে।
আদালতের মন্তব্য নিয়ে বাংলানিউজে খবরটি প্রকাশের পরে অনেককেই বলতে শুনেছি-- খবরটা সঠিক তো? আর কোনো মাধ্যমে প্রচার না হওয়ায় অনেকে সন্দিহান হয়ে পড়ে বাংলানিউজের ওই সংবাদে। যদিও বাংলানিউজ বরাবরের মতো ওই সংবাটির ক্ষেত্রেও পেশাদারিত্বের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়নি।
বাংলানিউজে প্রকাশিত খবরের পরে প্রতিক্রিয়া জানতে যথারীতি স্পিকারের কাছে যাই আমরা সংসদ বিটে কর্মরত প্রায় সবগুলো মিডিয়ার রিপোর্টাররা। যাওয়ার আগে বাংলানিউজের ওই খবরের একটি প্রিন্ট কপি হাতে নিতে ভুলি না। স্পিকারের কাছে গিয়ে দেখলাম তার টেবিলে আগে থেকেই রয়েছে একই খবরের প্রিন্ট কপি। দেখে ভালোই লাগলো।
পরে সন্ধ্যার পর যখন বিষয়টি নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য শুরু করেন তখন লাগলো আসল চমক। মেননসহ অনেকের হাতেই বাংলানিউজের প্রিন্টেড কপি। দেখলাম সরকারের এক মন্ত্রী যিনি অনলাইন নিউজ সার্ভিসকে পাত্তা দিতেন না তার হাতেও ওই কপি। ব্যাপারটি দেখে বেশ মজাই লাগলো। এর মধ্যে অফিসে নিউজও পাঠিয়েছি। সাংবাদিক গ্যালারি থেকে দেখলাম স্পিকারের সামনের আসনে থাকা সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারাও ল্যাপটপে তখন দেখছেন বাংলানিউজ।
আরো একবার নতুন করে অনলাইনের গুরুত্ব বুঝলাম। সেদিন প্রায় সারাদিনই সংসদে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলো বাংলানিউজ। সেই বাংলানিউজের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে সকলকে শুভেচ্ছা। আশাকরি আগামী দিনগুলোতেও আমরা আপনাদের সংবাদ পিপাসা সবার আগেই মেটাতে পারবো।
সাজিদুল হক, পার্লামেন্ট করেসপন্ডেন্ট, বাংলানিউজ
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, ০১ জুলাই, ২০১২
সম্পাদনা : আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর