৩রা জুলাই মঙ্গলবার ছিলো এনটিভি’র দশম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বার্তা সম্পাদক খায়রুল আনোয়ার মুকুলের সাথেই আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের মুকুল বিকশিত হয়েছিলো।
এনটিভি’তে আমার আরো দু’জন প্রিয় মানুষ আছেন। বার্তা বিভাগের জহির আর পরিচালক অতিশয় সজ্জন নুরুদ্দীন। আমার সহকর্মী সনি ডলি আর আশা আলমগীর মিলে ফুল নিয়ে এলেন এনটিভিতে দেবার জন্যে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অভ্যাগত অতিথিদের গাড়ির ভিড় ঠেলে এক পর্যায়ে পায়ে হেঁটে আমরা দৈনিক আমাদের অর্থনীতির তিন সহকর্মী দুপুরে পৌঁছি মুকুলের কক্ষে। তখন মাত্র বিদায় নিচ্ছিলেন ফকির আলমগীর। মুকুল আর জহিরের আন্তরিক আতিথেয়তায় মুগ্ধ না হবার কোনো জো নেই। সিনসিয়ার অ্যান্ড ইম্পেসিভ। এমনিতেই এনটিভির ইন্টেরিয়ার ডেকোরেশন চমৎকার। সেই সংগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর নানা আল্পনা।
লিফটে নামার মুহূর্তেই স্মরণে এলো বন্ধুবৎসল নুরুদ্দীনের সাথে দেখা করা হয়নি। একতলা সিড়ি ভেঙে উঠলে গাইডরা নিয়ে গেলেন এনটিভি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী ফালু সাহেবের কক্ষে। সেখানে বসা ছিলেন নূরুদ্দীন । ভদ্রতায় সবাই চেয়ার ছেড়ে জায়গা দিলেন। হাসিমুখ ফালু সাহেব উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দিলেন। হাত মিলিয়ে চেয়ারে বসতে গিয়ে লক্ষ্য করলাম কেউ একজন ভদ্রতাবিবর্জিত ভংগিতে পা উঠিয়ে বসা। এরকম একটি ভদ্রোচিত আন্তরিক পরিবেশে খাপছাড়া ব্যাপারটি নজর কাড়ে। আমি বসার আগেই সেই চেয়ার থেকে ভেসে এলো একটি পরিচিত কণ্ঠ, ’কেমন আছো, তুমি?
আমিতো হতবাক! ভদ্রলোক তুখোড়-তুমুল একজন সাংবাদিক নেতা। আমার সাথে এমন কোনো হূদ্যতা নেই যে দীর্ঘদিনের পরিচয়ের পরও তিনি আমাকে তুমি ডাকবেন। আর আমি সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য পদেও নেই।
একটি জাতীয় দৈনিকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে, জাতীয় প্রেস ক্লাবের দীর্ঘদিনের সম্পর্কেও সেই নেতা আমাকে কখনো তুমি ডাকেন নি। হঠাৎ করেই ফালু সাহেবের সামনে আমাকে ডেকে বসলেন তুমি।
এনটিভির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আনন্দময় পরিবেশটা বিনষ্ট ক’রতে চাইনি। পাল্টা যদি আমি উত্তর দিতাম, ’আমি ভালো, তুই কেমন? কেমন লাগতো সাংবাদিক নেতার? মান-সম্মান সবারই আছে। নিজে ভদ্রলোক ও ভদ্রলোকের সন্তান বলেই সাংবাদিক নেতার নামটা উচ্চারণ করলাম না।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১২
সম্পাদনা: নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর