পাটিগণিতে বড্ড কাঁচা আমি। বিসিএস পরীক্ষার জন্যে বন্ধু-আমলা আফতাব আহমেদের দারস্হ হয়েছিলাম।
সেই সমীকরণের সূত্রে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সন্তান ভর্তির জন্যে আম-জনতার হাতে থাকতে যাচ্ছে ’অশ্বডিম্ব’।
ধরা যাক, ধানমন্ডি হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। আসন সংখ্যা দুই শিফটে মিলিয়ে ৭শ’। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্রে ’মনে করি’ সাংসদদের ২ শতাংশ কোটা ’আনুষ্ঠানিকভাবে’ মঞ্জুর হয়েছে।
জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সাংসদের সংখ্যা ৩শ’। সংগী-সাথী হিসেবে দলীয় বিবেচনায় আছেন আরো ৫০জন নারী সাংসদ। নির্বাচিত কিংবা মনোনীত ’পাওয়ার’ ও দাপট কিন্তু কারো কম নেই।
যারা পাটিগণিতে দক্ষ তারা নিশ্চয় হিসাবটা অনুগ্রহপূর্বক করে দেবেন পাঠকের জন্যে। এক্ষেত্রে ঐকিক নিয়ম সহজবোধ্য হবে। প্রতি একশ ছাত্রের জন্যে সাংসদ প্রতি ২জন ছাত্র। অতএব, ৭শ’ ছাত্রের জন্যে সাংসদ প্রতি (৭x২)=১৪জন। সেহেতু ৩৫০ সাংসদের জন্যে?
এছাড়া সংবিধানে প্রদত্ত সমান অধিকারের বাংলাদেশে আছে বিভিন্ন কোটার ’উপদ্রব’। যতদূর জানি, সব মিলিয়ে বিরাজমান কোটার তালিকা খেয়ে ফেলে ৪৫ শতাংশ। বাদ বাকী ৫৫ শতাংশ এতোদিন ছিলো মেধার তালিকায়।
এখন সেই মেধা তালিকায় আনুষ্ঠানিক ’থাবা’ বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। এতোদিন প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য মৃদু’থাবা’য় অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিলেন। এবার পুরোটাই যাবে।
সন্তানদের এতো বকাঝকায় লেখাপড়া করিয়ে কী লাভ হবে অতি সাধারণ পাবলিকের? তবে প্রাইভেট টিউশানির খর্চ্চা আর ঝঁক্কি-ঝামেলা থেকে আম-জনতাকে বাঁচিয়ে দেয়ার জন্যে সরকারের বিরাট এক ধন্যবাদ পাওনা হয়েছে। কারণ নবরূপ আর সাজের ’কোটা’ ব্যবস্হার যোগ-বিয়োগে বিশাল অশ্বডিম্ব থাকবে জনগণের হিসাবের ঘরে।
আমি অবশ্য টোটালি দুশ্চিন্তামুক্ত। আমার এক মামা আওয়ামী লীগের আর আরেক খালাতো খালু বিএনপি’র, দু’জনেই সাংসদ। সব সরকারের আমলেই নিজের সন্তানের ভর্তি নিশ্চিত। সুবিধা মিললে দু’একটা তদবীর ফাও।
আবিদ রহমান
ই-মেলঃ abid.rahman@ymail.com
বাংলাদেশ সময় : ১১৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১২
সম্পাদনা : সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর Kumar.sarkerbd@gmail.com