গন্তব্য জানা হয়ে গেছে। মাইলফলক খোঁজ করার প্রয়োজন নেই।
গণজাগরণের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হবার কারণেই গণমাধ্যমের উপর, অনেক দায় চলে আসে। দায়টি হচ্ছে যে দাবি ও প্রত্যাশা থেকে গণসমাবেশের সূচনা সেই প্রত্যাশার গন্তব্যটি ঠিক রাখা। এবং গণসমাবেশটি থেকে যেনো কোন পক্ষ কোন ক্ষুদ্র স্বার্থ হাসিল করতে না পারে। এর মূল সুর যেন হয় স্বাধীনতা বিরোধীদের বিপক্ষের, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের। টেলিভিশন গুলো লাইভ সম্প্রচারের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে ইতিমধ্যেই। সেই প্রতিযোগিতায় নিজেদের সংযম কতোটা তারা ধরে রাখতে পারে, লাইভে অতিথি নির্বাচনে তারা রাজনীতি ও স্বার্থন্বেষী মহলকে কতোটা দূরে রাখতে পারে, সেটা পর্যবেক্ষণের বিষয়। তবে এরই মধ্যে কয়েকটি টেলিভিশন মাত্রা লংঘন করতে শুরু করেছে। নিজেরাই কায়রোর তাহরীর স্কোয়ারের অনুকরণে শাহবাগে সংগে স্কোয়ার জুড়ে দিচ্ছেন। কিন্তু চত্বর নামটি কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় শতভাগ মানানসই। কোন কোন টেলিভিশন চ্যানেলের রিপোর্টার এই গণসমাবেশকে আন্দোলনের কোন দিকে নিয়ে নেওয়া যায়, সরাসরি সম্প্রচারে সেই হিসেব- নিকেশ করছেন। গণজমায়েতে যে রাজনৈতিক নেতারা এসে একাত্মতা প্রকাশ করছেন, টেলিভিশন রিপোর্টাররা সেই রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে গণজমায়েতকে আন্দোলনে কিভাবে ব্যবহার করবেন, সেই নির্দেশনাটিও আদায় করতে চেষ্টা করছেন। কোন টেলিভিশন রিপোর্টার নিজেরাই মন্তব্য করতে শুরু করেন। এই দিক গুলো টেলিভিশন গুলোর পাশপাশি সকল গণমাধ্যমকে নজর রাখতে হবে।
গণজাগরণ এখন যে পর্যায়ে রয়েছে, তাতে যেকোন সময় যে কোন দিকে মোড় নিয়ে নিতে পারে। সেই মোড় নেওয়াটা যেনো কোন স্বার্থন্বেষী মহল নিজেদের দিকে না নিতে পারে, সেই রেফারির কাজটি পালন করতে হবে গণমাধ্যমকে। এজন্য গণমাধ্যমের দৃষ্টিটি সব সময়ই যুদ্ধাপরাধের বিচারের দিকে কেন্দ্রীভূত রাখতে হবে। গণমাধ্যমের নজরদারীতে জনজাগরণের এই ঘুর্ণি কেন্দ্রচ্যুত হতে পারবেনা। গণজাগরণের সহযাত্রী থেকে গণমাধ্যম গুলোকে কভারেজের প্রতিযোগিতায় গা ভাসিয়ে না দিয়ে, পরিচয় দিতে হবে দায়িত্বশীলতার। কোন একটি গণমাধ্যমের কোন একটি মন্তব্য বা দৃষ্টিভঙ্গী যেনো আন্দোলনের মূল সুরকে বেসুরো না করে দেয়, চেনা গণ্তব্যকে করে না দেয় অচেনা, গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে সেই বিচক্ষণতা প্রত্যাশা করছেন সাধারন পাঠক, শ্রোতা এবং দর্শকেরা।
বাংলাদেশ সময় ১০২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৩
এমএমকে